বৈশাখের দুপুরে রাস্তার নলকূপের জলে স্নানের জন্য লাইন পড়েছে। ঘিঞ্জি বস্তির ঘর থেকে বেরিয়ে গলি তস্য গলি পেরিয়ে কলপাড়ে পৌঁছতে হয়। জলের সংযোগ সব ঘরে পৌঁছয়নি। বস্তির ঘরের বাইরে জমে নর্দমার কালো জল। নিকাশি ব্যবস্থা নেই। ভারী বৃষ্টিতে ভেসে যায় পাড়া। রাজারহাটের নিউটাউন বিধানসভার গৌরাঙ্গনগরে এমনই এক বস্তিতে বৃহস্পতিবার পা রাখবেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
৪৮ ঘণ্টা আগে রাজারহাটের বিজেপি নেতারা প্রচার করছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গরিবের ‘মসিহা’। তাই হতদরিদ্র জায়গায় এসে গরিব মানুষদের সঙ্গে কথা বলবেন মোদীর ‘প্রধান সেনাপতি’ অমিত। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তফসিলি ও মতুয়াদের মধ্যে সংগঠন বিস্তারের ভাবনা থেকেই ওই এলাকায় অমিতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জ্যাংড়া-হাতিয়া়ড়া (২) পঞ্চায়েতের ৮০%-ই তফসিলি। পাশাপাশি, ৫ থেকে ৭% মতুয়া ভোট। ওই পঞ্চায়েতের মধ্যেই গৌরাঙ্গনগর। যেখানকার ২৩০ নম্বর দলীয় বুথ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন অমিত। যাবেন ৬-৭ জন সাধারণ মানুষের ঘরেও।
আরও পড়ুন: ফের চোখ রাঙাচ্ছে তাপপ্রবাহ
ওই পঞ্চায়েতে এখন গৌরাঙ্গনগর এলাকারই তিন জন বিজেপি সদস্য রয়েছেন। পঞ্চায়েতে গৌরাঙ্গনগর গত ১৫ বছর বিজেপি-র শক্ত ঘাঁটি। তৃণমূলের সুদিনেও ২৩০, ২৩১, ২৩২ ও ২৩৭ নম্বর বুথ সব ভোটেই বিজেপির দখলে। সংগঠন জোরদার না হওয়ায় সেখানে আধিপত্য নতুন করে বাড়াতে পারেনি তারা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজারহাট এলাকা নিম্নবর্গের হিন্দু অধ্যুষিত। এই সব অঞ্চল ঘরামি, গায়েন, মিস্ত্রি, রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। তাঁদের একজোট করতেই সর্বভারতীয় সভাপতিকে এখানে নিয়ে আসা হচ্ছে। তবেই রাজারহাটে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের সঙ্গে লড়াইটা জমবে।’’
মঙ্গলবার দুপুরে গৌরাঙ্গনগরে গিয়ে দেখা গেল পাড়ায় বাঁধা হয়েছে সবুজ-গেরুয়ার ম্যারাপ। বিচিত্র মণ্ডল, শর্মিষ্ঠা মণ্ডল, অঞ্জনা মণ্ডলদের মতো সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যেরা উৎসাহের সঙ্গে চেয়ে আছেন বৃহস্পতিবারের দিকে।