Amphan

ফের আর্জি আমপানে, বাড়ির ক্ষতিপূরণে ১৫৫৭ কোটি টাকা

২০ মে আমপান-দাপটের কমবেশি সাক্ষী ছিল কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমান।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২০ ০৬:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

ক্ষোভ-বিক্ষোভ, দাবি-আবেদন, অনুযোগ-অভিযোগ শেষে অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে বঙ্গে আমপান ক্ষতিপূরণ পর্বের সমাপ্তি হতে চলেছে। তার আগে আর এক দফা ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জমা দিতে পারবেন ক্ষতিগ্রস্ত। চলতি সপ্তাহেই তা দিতে হবে। আর সেই আবেদন বা দাবির সত্যতা সংশ্লিষ্ট জেলার সিনিয়র ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে যাচাই করবে ‘স্পেশাল টিম’ বা বিশেষ দল। শনিবার সেই মর্মে আমপান আছড়ে পড়া আট জেলায় নির্দেশ পাঠিয়েছে নবান্ন। তবে নতুন করে ক্ষতিপূরণের দাবির সত্যতা যাচাইয়ে চোখ নয়, কানই ভরসা আধিকারিকদের। কারণ, ঘটনার আড়াই মাসের পরে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে, তা মানছেন প্রশাসনের অনেকে। আমপানে বাড়ির ক্ষতিপূরণে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ দেওয়ায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যের খরচ হয়েছে প্রায় ১৫৫৭ কোটি টাকা।

Advertisement

২০ মে আমপান-দাপটের কমবেশি সাক্ষী ছিল কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমান। এই সব জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। স্থির হয়, পুরো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কুড়ি হাজার টাকা পাবেন আবেদনকারী আর আংশিক ক্ষতি হলে মিলবে পাঁচ হাজার টাকা। আবেদন করেছিলেন ক্ষতিগ্রস্তরা। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের সঙ্গে ছিল ভুয়োরাও। আত্মীয়দের পাশাপাশি কাছের লোককে ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। তুলনায় কম হলেও একই অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছে বিজেপিও। কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিয়েছে তৃণমূল। প্রশাসন আর দলের ‘চাপে’ ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দিয়েছেন ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তরা। তালিকার দোষ-ত্রুটি মিটিয়ে ২ জুলাই আমপানের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশ করেছিল প্রশাসন।

তালিকা প্রকাশের দিনও ড্রপ বক্সে আবেদন জমা পড়েছিল। পরবর্তী কয়েক দিন পোস্ট অফিসের মারফত আবেদন জমা দেন অনেকে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরেও অনেকে জমা দিয়েছিলেন। সেই সব আবেদন খতিয়ে দেখতে এই বিশেষ দল গঠন হচ্ছে। যাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌঁছে প্রতিটি আবেদনের সত্যতা যাচাই করবে। এত দিন পর্যন্ত ব্লক আর গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি দল এলাকায় গিয়ে খতিয়ে দেখেছিল। পুর এলাকায় তা করেছিলেন পুর আধিকারিকরা। নজরদারিতে গ্রামীণ এলাকায় ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) এবং শহুরে এলাকায় মহকুমাশাসক (এসডিও) উপর মূলত দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছিল। কিন্তু শনিবারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই দলগুলিতে সরাসরি নজর রাখবেন জেলা বা মহকুমা স্তরের সিনিয়র আধিকারিকরা। এ ক্ষেত্রে বিডিওকে সহয়তা করবেন অতিরিক্ত জেলাশাসক বা মহকুমাশাসক।

Advertisement

আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আমপানের জন্য ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা দিতে পারবেন আমজনতা। বিডিও অফিসে প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য আলাদা ড্রপ বক্স থাকবে। পুর এলাকার জন্য তা থাকবে এসডিও-র অফিসে। জুলাই আর অগস্টের আবেদন খতিয়ে দেখার কাজ ১২ অগস্টের মধ্যে শেষ করতে হবে। ১৯ অগস্ট ‘এগিয়ে বাংলা’ ওয়েবসাইটে ক্ষতিপূরণের তালিকা প্রকাশ পাবে। এখনও পর্যন্ত আমপানে ক্ষতিপূরণের জন্য আর্থিক সহয়তা চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ২২ লক্ষ। ৯৫.৪% এ আবেদনের ক্ষেত্রে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। প্রায় ১৭.৩০ লক্ষ বৈধ আবেদনের ভিত্তিতে বাড়ির জন্য ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ১৪,৮২,২৬০ জন। সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রায় ১৫৫৭ কোটি পেয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন