বাঙালির পাতে আসছে নতুন প্রজাতির মাছ আমুর

এই মাছের আঁতুড়ঘর দক্ষিণ ভারত। চলতি বছরের মে মাসে ‘আত্মা’ প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গে এই মাছের চাষ শুরু করে মৎস্য দফতর। আঁতুড়ঘর বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে আমুর মাছ এনে দেওয়া হয় এ রাজ্যের মৎস্য চাষিদের।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০১:০৪
Share:

আমুর: এই মাছেরই চাষ হচ্ছে হলদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

ওজন ১৩০০ থেকে ১৫০০ গ্রাম। স্বাদে-গন্ধে লোভনীয়। আর দামও নাগালের মধ্যে। বাঙালির পাতে পড়ার অপেক্ষায় নতুন প্রজাতির মাছ— আমুর।

Advertisement

এই মাছের আঁতুড়ঘর দক্ষিণ ভারত। চলতি বছরের মে মাসে ‘আত্মা’ প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গে এই মাছের চাষ শুরু করে মৎস্য দফতর। আঁতুড়ঘর বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে আমুর মাছ এনে দেওয়া হয় এ রাজ্যের মৎস্য চাষিদের। তারপর উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বাছাই করা কয়েকটি জেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে আমুরের প্রজনন ও চাষ হয়েছে। আর তাতে ফল মিলেছে ইতিবাচক। দক্ষিণবঙ্গে একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় নতুন এই মাছের চাষ হয়েছিল। হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে মাছ এনে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় চার মৎস্য চাষি নারায়ণ বর্মন, সুদীপ বিকাশ খাটুয়া, মৃন্ময় সামন্ত ও ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডলকে। চাষিদের এ জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো আমুর চাষে খুশি হলদিয়ার মৎস্যচাষিরা। হলদিয়া ব্লকের মৃন্ময় সামন্ত তাঁর জলাশয়ে আমুর চাষ করা করেছিলেন। মৃন্ময় বলেন, ‘‘এই মাছের স্বাদ খুব ভাল। আর খুব তাড়াতাড়ি ওজনে বাড়ে। তাই ভালই লাভ হবে।’’

হলদিয়ার ব্লক মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন সাহু জানালেন, কর্নাটকের বিজ্ঞানীরা আমেরিকান রুই মাছের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন এই প্রজাতি তৈরি করেছেন। তাই এই মাছের নাম দেওয়া হয়েছে আমুর। সুমন বলেন, ‘‘এই মাছগুলির ওজন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এক-একটি মাছের ওজন সর্বাধিক দু’কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। সুস্বাদু এই মাছটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অসাধারণ।’’ আর দামও মধ্যবিত্তের নাগালে। ক’দিন আগে হলদিয়া বাজারে কিলোগ্রাম প্রতি ১৪০ টাকা দরে আমুর মাছ বিক্রি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ত্রিপাক্ষিক নয়, চিঠি দিল রাজ্য

আমুর মাছের আরও একটি মস্ত গুণ হল, যে কোনও পরিবেশে তা বাড়তে পারে। রাজ্য মৎস্য দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা (সদর) উত্তম পাঁজা জানালেন, হলদিয়া ছাড়াও উত্তরবঙ্গের তিন জেলা দার্জিলিং, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে আমুর মাছের পরীক্ষামূলক চাষ হয়েছে। সেখানেও ভাল সাড়া মিলেছে। উত্তমবাবুর কথায়, ‘‘পাহাড়ের পরিবেশে সব মাছ বাড়ে না। কিন্তু আমুর মাছ সেখানেও দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে সক্ষম।’’

অর্থাৎ মাছে-ভাতে বাঙালির কাছে জনপ্রিয় হওয়ার সব গুণই হাজির এই আমুরে। এখন শুধু পাতে পড়ার অপেক্ষা। মৎস্য দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা (সদর) উত্তমবাবু জানিয়েছেন, এই মাছ চাষের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন