উদ্ধার হওয়া ঔরঙ্গজেবের মুদ্রার দু’পিঠ। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
শাহজাহান, ঔরঙ্গজেব এবং মহম্মদ শাহ। তিন মোগল বাদশাহের রুপোর মুদ্রা পাওয়া গেল বাঁকুড়া থেকে।
বাঁকুড়ার ২ ব্লকের নড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগনেজা গ্রামে ইটভাটার জন্য মাটি ফেলা হচ্ছিল। সেই মাটি আনা হয়েছে আড়াই কিলোমিটার দূরের ওলা গ্রাম থেকে। তার মধ্যেই মিলেছে বেশ কয়েকটি রুপোর মুদ্রা। ঠিক কতগুলো মুদ্রা ছিল, তার হিসেব আর মিলছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মুদ্রাগুলো সম্ভবত কোনও পাত্রে রাখা ছিল। তা ভেঙে মুদ্রা বেরিয়ে আসে। অনেকেই সেই মুদ্রা নিয়ে চলে গিয়েছেন বলেও স্থানীয় স্তরে দাবি। শেষ পর্যন্ত সপ্তদশ-অষ্টদশ শতকের চারটি মুদ্রা ভাল ভাবে দেখা গিয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভাগীয় প্রধান সুতপা সিংহ জানান, তার মধ্যে দু’টি মুদ্রা শাহজাহানের আমলের। সেই মুদ্রার অন্তত একটি মুর্শিদাবাদ টাঁকশালে তৈরি। আর একটি মুদ্রা মহম্মদ শাহর। বাকি মুদ্রাটি ঔরঙ্গজেবের। এটি আকারে বড়। এটাওয়া টাঁকশালে তৈরি। মুদ্রাটি ঔরঙ্গজেবের মসনদে ওঠার ৩৯ বছর পরে তৈরি। সুতপার বক্তব্য, ‘‘শাহজাহান ও মহম্মদ শাহের মুদ্রাগুলোর আকার ঔরঙ্গজেবের মুদ্রাটির থেকে ছোট। এই ধরনের মুদ্রা পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ঔরঙ্গজেবের মুদ্রাটি এক রুপাইয়া। বাকিগুলোর ওজন যদি অর্ধেক হয়, তা হলে হাফ রুপাইয়া হতে পারে।
মুদ্রার সংখ্যা ঠিক কত, তা না জানলে, তা কিভাবে এখানে পৌঁছয় অনুমান করা শক্ত। ওলার পাশেই তারকেশ্বর নদ। সেই নদ মিশেছে কংসাবতীতে। এই এলাকা থেকে বিষ্ণুপুর কাছেই। বিষ্ণুপুরের সংগ্রহশালার সদস্য সচিব চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্তের মতে, ‘‘মল্লরাজাদের সময়ে বিষ্ণুপুর মুঘল সাম্রাজের অধীনে ছিল। তাই বিষ্ণুপুর ও আশপাশের এলাকায় বাদশাহী মোহরের প্রচলন থাকার সম্ভাবনাও প্রবল।’’