বিক্ষোভ: মাছিভাঙা গ্রামে গ্রিড-বিরোধী মিছিল। ভাঙড়ে তখনও সভা চলছে মুখ্যমন্ত্রীর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে মন গলল না পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের। এ দিন তাঁর সভা চলাকালীনই ‘আন্দোলনকারীদের গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত মাছিভাঙা, খামারআইট, টোনা, উত্তর গাজিপুরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে, পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করলেন বহু মানুষ। ‘জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’র নেতৃত্বে সেই মিছিলের দাবি— পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প বন্ধ করা এবং তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের গ্রেফতারি।
কমিটির নেতা মির্জা হাসানের কথায়, ‘‘বারবার দাবি জানিয়েছিলাম মুখ্যমন্ত্রী অন্তত একবার ভাঙড়ে এসে আমাদের কথা শুনুন। কিন্তু তিনি গ্রিড থেকে ২৫ কিমি দূরে জনসভা করলেন। তাই প্রতিবাদ।’’
মুখ্যমন্ত্রী গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা শর্ত দিয়েছেন ভাঙড় আন্দোলনের নেতা, সিপিআইএমএল (রেডস্টার)-এর অলীক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘আগে সরকারকে বলতে হবে, কমিটির যাঁদের নামে পুলিশ মামলা দিয়েছে, তাঁরা আলোচনায় গেলে গ্রেফতার করা হবে না।’’ কমিটির নেতা মির্জা হাসানেরও বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আলোচনায় বসার জন্য আবেদন জানাতে বলেছেন। কিন্তু আগে তো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কাউকে গ্রেফতার করা হবে না, কথা দিতে হবে। এ নিয়ে যত দিন না সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আন্দোলন চলবে।’’
আরও পড়ুন:ভাঙড়ে কথা চান মমতা
মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরাও। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘সিঙ্গুর-আন্দোলনের সময়ে রাজ্যপালের মধ্যস্থতায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আলোচনায় বসেছিলেন বিরোধী নেত্রী মমতার সঙ্গে। মমতা তো সিঙ্গুরের বাসিন্দা ছিলেন না! আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বের সঙ্গেই সরকার সব সময় আলোচনা করে।’’ বিরোধীদের আরও অভিযোগ, এ দিন যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী ভাঙড়ে অস্ত্র ঢোকার কথা বলেছেন, তেমন অভিযোগ তো সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সময়েও উঠেছিল। আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বিমানবাবুর অভিযোগ, ভাঙড়ে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে সরকার।
দুই গ্রামের বেশির ভাগ আন্দোলনকারী এ দিন মিছিল করলেও জনা পঞ্চাশ মমতার সভায় গিয়েছিলেন। তাঁরা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম এবং কাইজার আহমেদের অনুগামী বলে আন্দোলনকারীদের দাবি।