সাত্তোর বধূ নির্যাতন কাণ্ড

গ্রেফতারি পরোয়ানা এড়াতে আগাম জামিন ওসি-সহ ৩ জনের

আদালতের নির্দেশ ছিল সাত্তোরের বধূ নির্যাতন-কাণ্ডে সিআইডি’র পেশ করা চার্জশিটে যে চার জন পুলিশকর্মীর নাম রয়েছে তাঁদের ২৯ এপ্রিল হাজিরা দিতে হবে। যদি কেউ অনুপস্থিত থাকেন তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে। নির্দিষ্ট দিনে অনুপস্থিত থাকলে যাতে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হয়, সে জন্য আগাম জামিন নিলেন অভিযুক্ত ওসি (এসওজি) কার্তিক মোহন ঘোষ-সহ তিন জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৫
Share:

আদালতের নির্দেশ ছিল সাত্তোরের বধূ নির্যাতন-কাণ্ডে সিআইডি’র পেশ করা চার্জশিটে যে চার জন পুলিশকর্মীর নাম রয়েছে তাঁদের ২৯ এপ্রিল হাজিরা দিতে হবে। যদি কেউ অনুপস্থিত থাকেন তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে। নির্দিষ্ট দিনে অনুপস্থিত থাকলে যাতে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হয়, সে জন্য আগাম জামিন নিলেন অভিযুক্ত ওসি (এসওজি) কার্তিক মোহন ঘোষ-সহ তিন জন। শুক্রবারে কার্তিকবাবু ১০০০ টাকার বণ্ডে জামিন পান সিউড়ি সিজেএম আদালতে। আবেদনের ভিত্তিতে মুখ্যবিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বৃহস্পতিবার একই ভাবে জামিন নিয়েছেন এসওজি-র দুই কনস্টেবল দীপক বাউড়ি, কাশীনাথ দাস জানিয়েছেন, সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অন্য অভিযুক্ত আল্পনা লোহার নামে এক মহিলা কনস্টেবল অবশ্য এখনও জামিনের আবেদন করেননি।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, সাত্তোরের এক বধূকে তাঁর বাপেরবাড়ি বুদবুদের কলমডাঙায় গিয়ে মধ্যযুগীয় অত্যাচার করেছিল পুলিশ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ উঠেছিল। জানুয়ারি মাসের সেই ঘটনায় গত ৯ মার্চ আদালতে চার্জশিট জমা করে সিআইডি দল। কিন্তু, চার্জশিট গ্রহণযোগ্যতায় নেয়নি আদালত। উল্টে, গত ১৭ মার্চ চার্জশিটে বেশ কিছু বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে প্রশ্ন তোলেন সিজেএম। পুর্নতদন্তের নির্দেশও দেয় আদালত।

কী সেই ফাঁক? গত ১৭ জানুয়ারির ওই ঘটনার পরে নির্যাতিতার স্বামী পাড়ুই থানায় একটি অভিযোগ করেন। সেখানে কিছু পুলিশকর্মী ও ছয় তৃণমূলকর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযানের কথা মেনে নিলেও শাসকদলের লোকেদের জড়িত থাকার অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশ। সিআইডি যে চার্জশিট জমা দিয়েছিল, তাতে নাম ছিল স্পেশ্যাল অপারেশন্স গ্রুপের ওসি কার্তিকমোহন ঘোষ, এসওজি-র দুই কনস্টেবল দীপক বাউড়ি, কাশীনাথ দাস এবং ইলামবাজার থানার এক মহিলা কনস্টেবল-সহ মোট চার জনের। অন্য দিকে, ঘটনার দিন দুই পরে বুদবুদ থানায় পৃথক একটি অভিযোগ করেন বিপ্লব চৌধুরী নামে জনৈক এক ব্যক্তি। তাতে ওই বধূর উপর নির্যাতনের ঘটনায় এসডিপিও বোলপুর, সিআই বোলপুর এবং ওসি এসওজি কার্তিকমোহন ঘোষ এবং এক তৃণমূল কর্মী শেখ আজগর-সহ কয়েক জনের নাম ছিল। দু’টি পৃথক অভিযোগ ধরে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্ত শেষ করে আদালতে সিআইডি-র পেশ করা চার্জশিটে অভিযুক্তদের মধ্যে এক মাত্র কার্তিকমোহন ঘোষ ছাড়া আর কারও নাম নেই। কিন্তু, বুদবুদ ও পাড়ুই থানায় দায়ের হওয়া অন্য অভিযুক্তদের ভূমিকা কী ছিল, সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি চার্জশিটে বলে প্রশ্ন তোলে আদালত। আরও কিছু বিষয়ে আপত্তি থাকায় ফের তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। অসুস্থতার কারণে সরে দাঁড়ান তদন্তকারী অফিসার প্রশান্ত নন্দী। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নেওয়া সুপ্রকাশ পট্টনায়ককে গত ২৩ মার্চ সুপ্রকাশ পট্টনায়ককে দ্রুত তদন্ত শেষ করে ফাইনাল রিপোর্ট জমা করতে বলে আদালত। গত ৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার চার্জশিট জমা করে সিআইডি। সিআইডি’র তরফে কোনও নতুন নাম চার্জশিটে যুক্ত হয়নি। তবে ৩৫৪ একটি জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত হয়েছে। আদালত চার্জশিটটি গত ১৭ এপ্রিল গ্রহণযোগ্যতায় নেওয়ার পর নির্দেশ দিয়েছিলেন ২৯ তারিখ অভিযুক্তদের আদালতে হাজির হতে। রণজিতবাবু বলেন, ‘‘২৯ তারিখ হাজিরা দিতে হবে। তবে আগাম জানিম নিয়ে নেওয়ায় ওই দিন অনুপস্থিত থাকলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে না তিন জনের ক্ষেত্রে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন