গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
জোড়া মামলা দায়ের হয়েছে আগেই। এ বার চাকরিহারা এসএসসি-র গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্ট। গত শুক্রবার ভাতা নিয়ে রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতা করে এই মামলাটি করেছে একটি সংগঠন। সোমবার হাই কোর্টে মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে চাকরিহারা সরকারি কর্মীদের ভাতা দেওয়া যাওয়া না। এটা অনৈতিক।’’ আদালতের কাছে তাদের আবেদন, রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হোক এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের। শুক্রবার মামলাটি গৃহীত হয়েছে। গরমের ছুটির পরে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে সংশ্লিষ্ট মামলার শুননি হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে গত শুক্রবার চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রাজ্য। তাতে বলা হয়, ২০১৬ সালে এসএসসি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র যে কর্মীরা আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা যথাক্রমে ২৫ এবং ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন। রাজ্য ওই প্রকল্পের নাম দিয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫।’ চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে ওই ভাতা কার্যকর করা হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ। অন্য দিকে, রাজ্যের এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা হয় হাই কোর্টে। সোমনাথ মণ্ডল-সহ কয়েক জন ‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থী একটি মামলা করেন। তাঁদের দাবি, ভাতা দিতে হলে সকল চাকরিপ্রার্থীকে দেওয়া হোক। অথবা, সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক। ওই মামলাটির শুনানিও গরমের ছুটির পরে হওয়ার কথা। ওই মামলা শুনবে বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলের গোড়ায় সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি নিয়োগ মামলার রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল করে দেয়। সেই সঙ্গে নতুন নিয়োগের জন্য রাজ্যকে তিন মাস সময় দিয়েছিল। পরে অবশ্য আবেদনের ভিত্তিতে নিয়োগের সময়সীমা বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। অন্য দিকে, চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা তার পর থেকে আন্দোলনে নেমেছেন। তার প্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আপাতত গ্রুপ সি কর্মীদের রাজ্য সরকার প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে দেবে। রাজ্যের যুক্তি, সরকার চাকরিহারাদের প্রতি সংবেদনশীল। তাঁদের পরিবার রয়েছে। এত দিন তাঁরা চাকরি করতেন। এখন চাকরি চলে যাওয়ায় পরিবারের উপর তার প্রভাব পড়ছে। সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে। সেই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাতা হিসাবে এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্যের ওই সিদ্ধান্ত সাময়িক।