রাজ্য পুলিশের ডিজি নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দেশ পরিবর্তন করতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের আর্জি খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, ইউপিএসসি-র সাহায্য নিয়েই ডিজি নিয়োগ করতে হবে।
২০০৬ সালে দুই প্রাক্তন ডিজি প্রকাশ সিংহ ও এন কে সিংহের আর্জির ভিত্তিতে বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করে শীর্ষ আদালত। তাতে বলা হয়, ডিজি ও অন্য পুলিশ-কর্তাদের নিয়োগ যোগ্যতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। নিয়োগের বিষয়টির উপরে নজরদারি করার জন্য রাজ্যে নিরাপত্তা কমিশন তৈরি করতে হবে। ডিজি ও পুলিশ সুপার পদে কোনও অফিসারের মেয়াদ দু’বছর হবে বলেও জানায় শীর্ষ আদালত। কোনও অফিসারকে কার্যনির্বাহী ডিজি হিসেবে নিয়োগের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
রাজ্যগুলি এই নির্দেশ মেনে ডিজি নিয়োগের ব্যবস্থা তৈরি করতে আইন আনে। কিন্তু গত বছরের ৩ জুলাই সেই আইন স্থগিত রাখে শীর্ষ আদালত। বলা হয়, বর্তমান ডিজি-র অবসরের তিন মাস আগে রাজ্য সরকার ইউপিএসসি-কে কয়েক জন অফিসারের নামের তালিকা পাঠাবে। তার ভিত্তিতে ইউপিএসসি নামের প্যানেল তৈরি করবে। সেই প্যানেল থেকেই এক জনকে ডিজি পদে নিয়োগ করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের তরফে শীর্ষ আদালতে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশ মেনে তারা ডিজি নিয়োগের ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলেছে। তাই ইউপিএসসি-র সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ডিজি নিয়োগের নির্দেশে পরিবর্তন করা হোক। গত ১২ ডিসেম্বর আর্জি শুনতে রাজি হয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু আজ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ডিজি নিয়োগ নিয়ে ওই নির্দেশ জনস্বার্থে ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে পুলিশ-কর্তাদের রক্ষা করতে দেওয়া হয়েছিল।
নবান্ন সূত্রে খবর, এ রাজ্যে ডিজি নিয়োগে এখনও পর্যন্ত নিজস্ব পদ্ধতিই মানা হচ্ছে। সেই পদ্ধতি অনুযায়ী, ডিজি স্তরের অফিসারদের মধ্যে এক জনকে রাজ্য পুলিশের ডিজি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। পরে বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) বৈঠকে সেই নামে সিলমোহর দেওয়া হয়। রাজ্য এখনও ইউপিএসসি-এর কাছে সম্ভাব্য ডিজি-দের নামের তালিকা পাঠায়নি। সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায় নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি রাজ্য সরকারের কর্তারা। তবে সূত্রের খবর, রায়ের প্রতিলিপি হাতে পেয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হতে পারে।