আরাবুল ইসলাম। ফাইল চিত্র।
ভাঙড়ের নির্দল সমর্থক হাফিজুল রহমান মোল্লা খুনে আরাবুল ইসলাম কোনও ভাবেই জড়িত নন বলে বারুইপুর আদালতে হলফনামা জমা দিলেন নিহতের স্ত্রী সাবিরা বিবি! কোনও চাপের কাছে নতিস্বীকার করে সাবিরা ওই হলফনামা দিয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার জন্য বৃহস্পতিবার তদন্তকারী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন ওই আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক।
গত ১১ মে ভাঙড়ের নতুনহাটে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মাছিভাঙা গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুলের। সেই খুনে আরাবুল ছাড়াও তাঁর ছেলে হাকিবুল, ভাই আজিজুর ইসলাম-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে কাশীপুর থানায় এফআইআর হয়। অভিযোগকারী ওলিল মোল্লা হাফিজুলের প্রতিবেশী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই রাতেই পুলিশ আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
বুধবার বারুইপুর আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে এই হলফনামা জমা করেছেন সাবিরা। হলফনামা নিয়ে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সপ্তাহখানেক আগে তিনি রাজারহাটে বাপের বাড়ি চলে যান।
এই ঘটনায় বিস্মিত ওলিল বলেন, ‘‘১১মে আমি হাফিজুলের পাশে ছিলাম। ঘটনাস্থলে হাকিমুল, আরাবুল, আজিজুলরা ছিল। সাবিরা তখন বাপের বাড়িতে ছিলেন। আমরাই ওঁকে খুনের কথা জানাই। ঘটনার সময় কে কে ছিল সাবিরা জানবেন কী করে?’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, খুনে অভিযুক্ত ১২ জন এখনও অধরা। তারা হুমকি দিচ্ছে। তারাই সাবিরাকে হুমকি দিয়ে হলফনামা লেখাতে পারে। নিহত হাফিজুলের দাদা আইজুল মোল্লা বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার সময় সাবিরা মাছিভাঙায় ছিলেন না। পরে এসেছিলেন। তিনি খুনের বিষয়ে কিছুই জানেন না। কী করে হলফনামা দিলেন, জানি না।’’ জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ মল্লিক বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার পর সাবিরাই আরাবুলের চরম শাস্তি দাবি করেছিলেন।’’ কমিটির দাবি, পুলিশ ও তৃণমূল সাবিরাকে চাপ দিয়ে হলফনামা লিখিয়েছে।
বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘হলফনামা নিয়ে পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।’’ ভাঙড়ের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘‘আইন মোতাবেক তদন্ত হোক।’’