ধৃত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল বাংলাদেশ

পুলিশ এখন জানতে পেরেছে, মামুনুর কেবল জঙ্গিই নয়, বাংলাদেশের নিম্ন আদালত সেখানকার একটি খুনের মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৪৪
Share:

মামুনুর রশিদ। —ফাইল চিত্র।

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘নব্য জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ’-এর (জেএমবি) তিন চাঁই মামুনুর রশিদ, মহম্মদ জিয়াউর রহমান এবং মহম্মদ শাহিন আলমকে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) গত ২৪ জুন শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গ্রেফতার করেছিল। তারা এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি।

Advertisement

পুলিশ এখন জানতে পেরেছে, মামুনুর কেবল জঙ্গিই নয়, বাংলাদেশের নিম্ন আদালত সেখানকার একটি খুনের মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দিয়েছে। বাংলাদেশে অবশ্য তার নাম জহিরুল ইসলাম পলাশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ডিগ্রিধারী জহিরুলের বাড়ি রাজশাহিতে। সে বাংলাদেশে বেসরকারি একটি অর্থ লগ্নি সংস্থার কর্তা ছিল। অভিযোগ, অন্য একটি অর্থ লগ্নি সংস্থার অন্যতম কর্তা সিতাংশুশেখর বিশ্বাসের সঙ্গে টাকা লগ্নি নিয়ে বিরোধের জেরে জহিরুল তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরী মণ্ডলকে ২০১৫ সালে খুন করে। ওই খুনের

মামলায় জামিন পাওয়ার পরে সে এ দেশে পালিয়ে এসে জঙ্গি সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করে।

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের একটি আদালত জহিরুলকে খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। লালবাজারের তদন্তকারীদের কাছেও খুনের কথা কবুলও করেছে জহিরুল। লালবাজার জানতে পেরেছে, চলতি সপ্তাহেই বাংলাদেশের ‘কাউন্টার টেররিজম ইউনিট’ নব্য জেএমবির সদস্য সফিকুল ইসলাম ওরফে মোল্লাজীকে গ্রেফতার করেছে। তার সঙ্গেই ধরা পড়েছে মোস্তফা আরিফ নামে অন্য এক জঙ্গি। তাদের জেরা করেই বাংলাদেশ পুলিশ জানতে পারে, জুন মাসে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের হাতে ধরা পড়া মামুনুর রশিদের আসল নাম জহিরুল। তার সঙ্গে কলকাতায় ধরা পড়া জঙ্গি জিয়াউরও খুনের মামলায় অভিযুক্ত। আর, অন্য জঙ্গি শাহিনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে কী ভাবে তিন জন পালিয়ে এ দেশে ঢুকল? গোয়েন্দারা জানান, সফিকুলই তাদের বছর দু’য়েক আগে এদেশে নিয়ে এসে কেরলে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। সঙ্গে ছিল আরিফও। পরে জহিরুল, মহসিন এবং আলামিন হাওড়ার উলুবেড়িয়াতে ডেরা তৈরি করে রাজমিস্ত্রি ও ফেরিওয়ালার কাজ শুরু করে। রাতে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সংগঠনের কাজ করত তারা। জহিরুল-সহ বাকি তিন জন ধরা পড়তেই সফিকুল এবং আরিফ বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।

লালবাজার জেনেছে, চাপাই নবাবগঞ্জের বাসিন্দা জিয়াউর বাংলাদেশে সলমান তারিক নামে এক ব্যক্তিকে সাংগঠনিক বিবাদ নিয়ে ঝামেলার জেরে খুন করেছে বলে অভিযোগ। মূলত জঙ্গল কেটে জঙ্গি শিবির তৈরি করা নিয়ে গোলমালের জেরে সলমন খুন হয়। এর পরেই সে এ দেশে চলে আসে সে।

লালবাজারের দাবি, ধৃত শাহিন আলম ওরফে আলামিনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একাধিক থানায় আইএস কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। জাহিরের সঙ্গে সে মোল্লাজীর মাধ্যমে এ দেশে এসেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন