শিলিগুড়িতে ভারতীয় নেপালি ডেভেলপমেন্ট ফওরামের অনুষ্ঠানে হরকা বাহাদুর ছেত্রী ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
তরাই ও ডুয়ার্সের নেপালি ও আদিবাসীদের জন্য দু’টি আলাদা টাস্ক ফোর্স তৈরি করে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের কাছে টানার চেষ্টা করলেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অরূপবাবুই এখন তৃণমূলের হয়ে পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে তরাই-ডুয়ার্স নেপালি কল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই ঘোষণা করেন তিনি। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালিম্পংয়ের মোর্চাত্যাগী বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রীও। মঞ্চে তাঁর বক্তব্যে অরূপবাবু হরকাবাহাদুর ও তাঁর অনুগামীদের কাছেও আগামী নির্বাচনে সমর্থন চান। বক্তব্য জানান, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই চিন্তাভাবনা ছিল, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটাই তিনি এ দিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন এই টাস্ক ফোর্স অনেকটা উন্নয়ন পর্ষদের মতোই কাজ করবে। তবে ফোর্সে কারা, কত জন থাকবেন, সে সব নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ সেই সঙ্গে কবে থেকে টাস্ক ফোর্স কাজ শুরু করবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। হরকাবাহাদুরের বক্তব্য, ‘‘আমাকে আহ্বান করায় এসেছিলাম। মন্ত্রী হিসেবে যে সরকারি প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু এর বেশি এখন আর কিছু বলছি না।’’
এ দিন একই মঞ্চ থেকে সরকারি ঘোষণার পাশাপাশি দলীয় প্রচারও সেরে নেন যুবকল্যাণ মন্ত্রী। প্রথমে সরকারি ঘোষণা করে উপস্থিত নেপালি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মন জিতে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তারপরেই তাঁদের কাছে এক যোগে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার জন্য দাবি জানান। মোর্চা, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস কেউ সঠিক পথে এগোচ্ছে না বলে জানিয়ে তিনি ফের তৃণমূলকেই আরও পাঁচ বছরের জন্য সরকারে আনতে তরাই-ডুয়ার্সের নেপালি ও আদিবাসীদের সমর্থন করতে বলেন।
এ দিন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার প্রায় সব শীর্ষ নেতারাই উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। অরূপবাবু তাঁর বক্তব্যে মন্ত্রী বিমল গুরুঙ্গকে মিথ্যাবাদী বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী। এমনকী রাজ্য সরকার যে উন্নয়নের জন্য ও জিটিএ চালাতে অর্থ বরাদ্দ পাঠাচ্ছেন, তার কোনও হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। চাইলেও জিটিএ সদস্যরা তা দিচ্ছেন না। পাহাড়ের মানুষের উন্নয়নের টাকা কয়েক জনের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার হচ্ছে বলে জানান তিনি। যদিও তাঁর সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন মোর্চা সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। তিনি বলেন, ‘‘উনি পাহাড়ে অডিটর নিয়ে আসুন। সমস্ত হিসেব দেওয়া হবে। বাইরে থেকে ও সব বলে লাভ নেই।’’ তিনি অন্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তৃণমূল বরাবর ভোট রাজনীতি করে এসেছে। এই টাস্ক ফোর্সও ভোট রাজনীতিরই আরও একটা তাস। নেপালি জনজাতিকে বিভক্ত করে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। হরকবাহাদুর এখন তৃণমূলের ‘বি-টিম’ হিসেবে কাজ করছে।’’