COal

কয়লা পাচার চক্রে নজরে ‘অশোকজি’

শনিবার দিনভর চার রাজ্যে ৪৫টি স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআইয়ের দল। নজরদারিতে ছিলেন খোদ সিবিআই অধিকর্তা ঋষিকুমার শুক্ল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

কয়লা পাচার কাণ্ডে লালার সাম্রাজ্যের কথা আগেই উঠে এসেছিল। তার সঙ্গে জড়িয়েছে কোল ইন্ডিয়া, সিআইএসএফ, পুলিশ ও প্রভাবশালীদের নাম। সিবিআইয়ের তদন্তে নয়া সংযোজন ‘অশোকজি’। সিবিআই সূত্রের দাবি, লালার সাম্রাজ্যের সঙ্গে ইসিএল, সিআইএসএফ, কলকাতার প্রভাবশালী ও পুলিশ মহলের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিলেন এই অশোকজি। তাঁর সূত্রেই কয়লা চক্রের বহু চাঁইয়ের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হবে।

Advertisement

তবে অশোকজির আসল পরিচয় এখনই প্রকাশ্যে আনছে না সিবিআই। সিবিআইয়ের এক কর্তার দাবি, ‘‘আমরাও সব দিক খুঁটিয়ে দেখে অশোকজির আসল পরিচয় প্রকাশ করব। প্রয়োজনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে। আপাতত কয়লা পাচার চক্রের তিনিই ভরকেন্দ্র বলে মনে হচ্ছে।’’

শনিবার দিনভর চার রাজ্যে ৪৫টি স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআইয়ের দল। নজরদারিতে ছিলেন খোদ সিবিআই অধিকর্তা ঋষিকুমার শুক্ল। তবে এই চক্রের মূল অভিযুক্ত লালার হদিশ পাননি তদন্তকারীরা। সূত্রের দাবি, ভামুরিয়া-নিতুড়িয়ায় সিবিআই পৌঁছতেই খবর পেয়ে যান লালা। তার পরে পালিয়ে যেতে তিনি দেরি করেননি। তবে সিবিআইয়ের দাবি, তল্লাশিতে বাজেয়াপ্ত হওয়া নথি খতিয়ে দেখা চলছে। আয়কর দফতরের তথ্যও গোছানো হচ্ছে। তার পরেই কয়লা পাচারকারীদের সঙ্গে যুক্তদের তলব শুরু হবে। সক্রিয় হবে আয়করও দফতর।

Advertisement

সূত্রের দাবি, এই নথি ঘেঁটেই অশোকজির নাম উঠে এসেছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, আসানসোলের কয়লার কারবারের ভরকেন্দ্র এই অশোকজি। তিনিই এক হিসাবপরীক্ষককে নিয়মিত লালার টাকা কোথায় পাঠাতে হবে তা নির্দেশ দিতেন। অশোকজির নির্দেশেই এক প্রভাবশালীর পূর্ব এশিয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে টাকা পাঠিয়েছিলেন ওই হিসাবপরীক্ষক। সিবিআই এবং আয়কর দফতর পরীক্ষা করে দেখছে, সংশ্লিষ্ট টাকা যাঁর অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে তা বৈধ কি না? ওই টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আয়করে ঘোষিত টাকা কি না? যদি আয়করে সেই টাকার উৎস দেখানো না থাকে তা হলে কয়লার টাকা প্রাপককে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হতে পারে বলে জানাচ্ছেন সিবিআই এবং আয়কর কর্তারা। অশোকজির নির্দেশে ইউরোপেও টাকা যাওয়ার নথি পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এ ছাড়া, লালার একটি ট্রাস্টের সন্ধান মিলেছে। সেই ট্রাস্টের মাধ্যমেও বহু মানুষের কাছে টাকা গিয়েছে।

সিবিআইয়ের দাবি, অশোকজি ছাড়াও আরও কিছু নাম নথিপত্র ঘেঁটে পাওয়া যাচ্ছে। চোরাই কয়লা কিনে আসানসোল-দুর্গাপুরে বেশ সংস্থা কারবার চালাত। সব জেনেশুনেও চোরাই কয়লা কিনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ওই শিল্প সংস্থাগুলি কেন করেছে তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবারের তল্লাশিতে সিবিআই মোট ২৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। মূলত তা পাওয়া গিয়েছে ইসিএলের কর্তাদের বাড়ি থেকে। কুনুস্তরিয়ার যে নিরাপত্তা অফিসার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁর বাড়ি থেকে মিলেছিল নগদ ৬ লক্ষ টাকা। এক জেনারেল ম্যানেজারের কাছে তিন লক্ষ টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। এ ছাড়া লালার বাড়ি ও অফিস থেকে কিছু নথিপত্র উদ্ধার করে আনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন