প্রয়োজন ছিল প্রাক্তনের। বিষয়টি জেনেই পূর্ণ সহযোগিতা করলেন বর্তমান।
আধার-প্রক্রিয়া যখন পুরোদমে চলছিল, অসুস্থতার কারণে স্ত্রী এবং কন্যার সঙ্গে তখন নিজের আধার কার্ড করাতে পারেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ৩১ মার্চের পর থেকে অনেক দিন বন্ধ ছিল আধার-প্রক্রিয়া। সম্প্রতি ফের তা কিছু দিনের জন্য চালু হয়েছে। বুদ্ধবাবুর অসুস্থতা এ বারও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। বিষয়টি জেনে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর (সিএমও)।
প্রশাসনের তরফে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও সূত্রের খবর, বুদ্ধবাবুর আধার কার্ডের প্রয়োজনের কথাটি নবান্নকে জানায় কলকাতা পুরসভা। কালক্ষেপ না করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার নির্দেশ পুরসভাকে দেয় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। সপ্তাহখানেক আগে পুরসভার আধিকারিকেরা বুদ্ধবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর নাম আধারে নথিভুক্ত করেন। সঙ্গে সঙ্গে কার্ডও তৈরি করে দেওয়া হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। আপাত ভাবে বিষয়টি পুরোপুরি প্রশাসনিক হলেও এর তাৎপর্য অস্বীকার করছেন না আধিকারিকদের কেউই। তাঁদের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ঘটনা রাজনৈতিক সৌজন্যের অন্যতম উদাহরণ।
এই সৌজন্য অবশ্য পালাবদলের পর থেকেই বরাবরই রক্ষা করে এসেছেন মমতা। ২০১১ সালে বুদ্ধদেববাবু সহ বাম নেতা-মন্ত্রীদের অনেককেই নিজের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। বুদ্ধবাবুর সরকারি আবাসনে গাছের শেকড় দেওয়াল ফাটিয়ে দিচ্ছিল। বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরাদেবী বলা মাত্র পুরসভা পদক্ষেপ করে।
কিছু দিন আগে বুদ্ধবাবুর আবাসনে মেরামতি ও শৌচাগার সংস্কারের কাজ নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছিলেন মমতা। বুদ্ধবাবুর শরীর-স্বাস্থ্যের খবর নিতেও গিয়েছেন। বিশেষ চিকিৎসা পরিকাঠামো-সহ সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। পাল্টা সৌজন্য ছিল বুদ্ধদেববাবুর তরফেও। এ বার বুদ্ধদেববাবুর আধার কার্ড তৈরির বিষয়টিও সেই সৌজন্যেরই অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, গত ৩১ মার্চ আধার প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার পরে রাজ্যের আর্জিতেই ফের তা ৩০ জুন পর্যন্ত চালানোর অনুমতি দিয়েছে আধার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউআইডিএআই। এই মুহূর্তে তিনটি সংস্থা কলকাতা পুরসভার চারটি বরো এলাকায় কাজ করছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে আধার নথিভুক্তি এবং পরিমার্জনের কাজ চলছে।