বাগ়ডোগরা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল তৈরির জন্য লাগোয়া চা-বাগানের জমির কথা ভাবা হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও শুরু করেছে প্রশাসন।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠকে উঠে এসেছে ডানকান গোষ্ঠীর গঙ্গারাম টি এস্টেটের কথা। রানওয়ের গায়ে এই চা বাগানটির ৯২ একর জমি পাওয়া গেলে সেখানে নতুন টার্মিনাল তৈরি করতে চান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বাগডোগরায় যে হারে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে ওই জমি পেলে বছরে ৫০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারেন এমন একটি টার্মিনাল বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায় জানিয়েছেন, ২০১৬ এপ্রিল মাসে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৬৭ জন যাত্রী এই বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেছিলেন। সেই সংখ্যাটি এ বারের এপ্রিলে বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪২৫ জন। অধিকর্তার কথায়, ‘‘উড়ানের সংখ্যাও ৮০৪ থেকে ১৩০২ হয়েছে, যা ৬০ শতাংশেরও বেশি।’’ এখন যে টার্মিনালটি রয়েছে, তাতে বসার জায়গা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এক্স-রে, চেক-ইন কাউন্টার, নিরাপত্তা বেষ্টনী— সর্বত্র এত লাইন পড়ছে যে উড়ান ছাড়ার ৩ ঘণ্টা আগে যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছতে অনুরোধ করা হচ্ছে। যদি আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে টার্মিনাল তৈরির কাজ শুরু করা যায়, তা হলেও শেষ হতে অন্তত আড়াই বছর লাগবে।
নতুন টার্মিনাল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বছর খানেক আগেই। রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ী, তারা জোর করে জমি অধিগ্রহণ করবে না। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আইন অনুযায়ী, তাঁরাও সরাসরি জমি কিনবেন না। এ বার বৈঠকে এমন জমি খোঁজা হয়েছে, যেখানে জোর করে কাউকে উচ্ছেদ করতে হবে না। তখনই উঠে এসেছে বিমানবন্দর লাগোয়া দু’টি চা বাগানের কথা। ঠিক হয়েছে, সেই চা বাগানের জমি কাজে লাগানো হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, আলোচনা শুরু হয়েছে তাদের মালিকের সঙ্গে।
নির্দিষ্ট করে যে গঙ্গারাম চা বাগানের নাম শেষ বৈঠকে উঠেছে, তার মালিক জি পি গোয়েঙ্কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে প্রাথমিক যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি চান— প্রশাসন এমন লিখিত প্রস্তাব দিক, যেখানে ক্ষতিপূরণের স্পষ্ট উল্লেখ থাকে।
তবে কে এই ক্ষতিপূরণ দেবে— রাজ্য না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, সেই সমাধান সূত্র এখনও মেলেনি।