Partha Chatterjee

‘মদনকে নিজের ফোন নম্বর দেবে না’, বৈশাখীকে বারণ করেছিলেন পার্থ! ষষ্ঠীতে ফাঁস করলেন শোভন-বান্ধবী

এক বার নাকি তাঁকে আর মদন মিত্রকে কাছাকাছি দেখে দূর থেকেই ‘এসএমএস’ করে মদনকে যেন তিনি নিজের ফোন নম্বর বৈশাখী না দেন সে ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন পার্থ। শনিবার জানালেন বৈশাখী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২২ ২০:৫৩
Share:

পার্থের কথা ফাঁস করলেন বৈশাখী। — ফাইল চিত্র।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন সিবিআই হেফাজতে। পুজোয় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পার্থ-‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু শারদীয় ষষ্ঠীতে সেই পার্থ-অর্পিতাই রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এলেন। নিয়ে এলেন আরও এক রাজনীতিক তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, এক বার নাকি মদন মিত্র আর বৈশাখীকে কাছাকাছি একটি সভায় দেখেছিলেন পার্থ। দূর থেকেই তখন ‘এসএমএস’ করে মদনকে যেন নিজের ফোন নম্বর বৈশাখী না দেন সে ব্যাপারে শোভন-বান্ধবীকে সতর্ক করেছিলেন পার্থ।

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় ‘এবিপি আনন্দ’-র আড্ডার আসরে মিলেছিলেন শোভন, বৈশাখী ও মদন। সেখানেই ওঠে পার্থ প্রসঙ্গ। আর তখনই এক গল্প শোনান বৈশাখী। জানান, সরকারি ভবন ‘উত্তীর্ণ’-র একটি সভাগৃহে ঘটে সেই ঘটনা। বৈশাখী বলেন, ‘‘শোভন মঞ্চে। তখন শোভনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বের কথা একটু একটু রটে যায়। মঞ্চে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে চার পাঁচ জন আমায় চেনেন। মমতাদি তখনও আসেননি। বিভিন্ন জন বক্তৃতা করছিলেন। আমি দাঁড়িয়ে আছি একটা জায়গায়। আমাকে বসানোর জন্য কেউ কেউ এগিয়ে আসছেন। এক জন বললেন, ‘‘‘আপনি এখানে বসবেন?’ এত অন্ধকার যে চেনা যাচ্ছে না। কিন্তু মদনদার দুধে-আলতা গায়ের রং! আমি বললাম, ‘না না আমি বসব না, দাঁড়াই।’ মদনদা বললেন, ‘বসলে বসে পড়ো।’ হঠাৎ দেখি আমার ফোনে একটা মেসেজ। দেখি লিখেছে, ‘মদনকে কিন্তু নিজের ফোন নম্বর দেবে না।’ আমি ভাবছি, কতটা তীক্ষ্ণ নজর হলে মঞ্চ থেকে কেউ এটা ঠিক করার চেষ্টা করতে পারেন।’’ এখানেই না থেমে বৈশাখী বলেন, ‘‘এটা যদি শোভন বলত, মানা যেত। কিন্তু আমার মন্ত্রী মঞ্চ থেকে নজর রাখছেন, মদন মিত্রকে যেন আমি ফোন নম্বর না দিই।’’

তখনও পর্যন্ত পার্থের নাম নেননি বৈশাখী। পরে অবশ্য বলেই ফেলেন কার কথা বলতে চাইছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার যিনি মন্ত্রী ছিলেন। আমি যাঁর দফতরে কাজ করতাম। যাঁর বান্ধবীকে নিয়ে এখন এত আলোচনা।’’ এখানেই শেষ হয়নি ঘটনা। পরে এ নিয়ে পার্থের সঙ্গেও কথা হয় বৈশাখীর। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পরে আমি পার্থদাকে বলেছিলাম, আপনি ওই মঞ্চ থেকে কী করে দেখতে পেলেন? তার মানে মদনদাকেই দেখছিলেন?’’ বৈশাখীকে জবাবে পার্থ বলেছিলেন, ‘‘তুমিও তো ঘুরেফিরে সেই মদনের পাশে গিয়েই দাঁড়ালে দেখছি।’’

Advertisement

পার্থের প্রসঙ্গের আগে অবশ্য মদনের প্রশংসাই করছিলেন বৈশাখী। তিনি বলেন, ‘‘বাকিরা সবাই আড়ালে বলে, বৈশাখী খুব ভাল। কিন্তু আর কেউ মুখের উপরে বলবে না, ‘ও লাভলি!’ এটা মদনদাই পারে। এটা আজ বলে নয়। চিরকালই। আমাকে ভরা ঘরের মধ্যে মদনদা একটা কথা বলেছিলেন, আমার মনে আছে। মদনদার কলেজে গিয়েছিলাম। মদনদা বলেছিলেন, ‘ও বৈশাখী এসেছে, এটা তো ভাল হয়েছে। বৈশাখীকে তো আজকাল শোনা যায়, শিক্ষা দফতরের এটিএম।’ এই কথা মুখের উপরে বলে দেওয়া মানেই হচ্ছে তিনি ওপেন মাইন্ডেড।’’

তবে পার্থ প্রসঙ্গ উঠতেই আলোচনা সে দিকে চলে যায়। বৈশাখীর ডান পাশে বসে থাকা শোভন বলেন, ‘‘রংটং মেখে থাকলে না, সেটাকে লোকে জোকার মনে করে। আর সার্কাস যাঁরা দেখতে যান তাঁরা জোকারকে নিয়ে নিজেরা হাসাহাসি করেন। বহু জোকার এই রকম ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটাই হল ঘটনা।’’ আর বৈশাখীর বাঁ পাশে বসা মদন বলেন, ‘‘বাঙালিরা অন্যের ব্যাপারে বড্ড মাথা ঘামায়। আমার আজকে পার্থদার জন্য খারাপ লাগছে। কিন্তু ও যদি অন্যের ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে নিজের বিষয়ে মাথা ঘামাত তবে হয়তো ওঁকে এই ভাবে পস্তাতে হত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন