জমি না থাকলেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, মত কলকাতা হাইকোর্টের।
শান্তিপূর্ণ ভাবে কোনও বিষয়ের বিরোধিতা করা যে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, বুধবার সেটা আরও এক বার জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মনে করিয়ে দিয়েছে, বন্ধ ডেকে জোর করে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত করার অধিকারও কারও নেই।
বিজেপির ডাকা এ দিনের ১২ ঘণ্টার বন্ধকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। তার শুনানিতেই মৌলিক অধিকার এবং তার সীমার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। আইনজীবী শিবিরের পর্যবেক্ষণ, কোনও বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোর মৌলিক অধিকারকে স্বীকার করে নিয়েই আদালত এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, আমজনতার অসুবিধা করে, গায়ের জোর খাটিয়ে নিজেদের মত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলতে পারে না।
বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে জনজীবনে স্বাভাবিকতা বজায় রাখার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের ডিজি, আইজি এবং সব জেলাশাসককে এ দিন কিছু নির্দেশও দিয়েছে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, বন্ধে নাগরিক জীবন যাতে কোনও অবস্থাতেই বাধা না-পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সচল রাখতে হবে ট্রেন ও সড়ক যোগাযোগ। টেলিফোন, জল, বিদ্যুৎ, দুধ, হাসপাতাল, দমকলের মতো জরুরি পরিষেবা পেতে নাগরিকদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, নিশ্চিত করতে হবে তা-ও। সমাজবিরোধী কাজকর্ম, গুন্ডামি হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এড়াতে হবে অপ্রীতিকর ঘটনা।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, বন্ধ বা হরতালের দিন যাঁরা কাজে বেরোন, তাঁদের পরিবার-পরিজন সারা দিন দুশ্চিন্তায় থাকেন। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দের উদ্দেশে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি জানান, সড়কপথ বা ট্রেন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে নিত্যযাত্রীরা অসুবিধায় পড়েন। বিপদের সময় হেল্পলাইনে টেলিফোন করে তাঁরা যাতে পুলিশ বা রেল-কর্তৃপক্ষের সাহায্য চাইতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
কিশোরবাবু আদালতে জানান, এ দিনের বন্ধে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থাই নিয়েছে। সরকারি বাস, ফেরি সার্ভিস সচল রয়েছে। স্বাভাবিক আছে রেল ও মেট্রো পরিষেবা। রাস্তায় বেরোনো মানুষজনকে সাহায্য করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের হেল্পলাইন নম্বর ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে। কৌশিকবাবু পরে জানান, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হেল্পলাইনের নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদালতকে।