নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হিমসিম দশা পঞ্চায়েতের কর্মীদের। ঠিকমতো প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে না বলে জেলার বেশ কিছু জায়গায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না, অভিযোগ পঞ্চায়েতের কর্তাদের। তার জেরে ১০০ দিনের কাজ গতি হারাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সম্প্রতি জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব এ ব্যাপারে চিঠি দিয়ে সমস্যা উল্লেখ করেছেন। জানা গিয়েছে, নতুন ‘ভুবন’ অ্যাপ নিয়ে অন্য নানা জেলার পঞ্চায়েতের কর্মীরাও সমস্যায় পড়ছেন।
গত বছর মার্চ থেকে ১০০ দিনের প্রকল্পে ‘ভুবন’ নামে অ্যাপটি চালু করেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর। সে জন্য পঞ্চায়েতের গ্রাম রোজগার সেবকদের একটি করে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দেওয়া হয়েছিল। তাতে ছিল অ্যাপটি। তখন কাজ শেষ হওয়ার পরে অ্যাপের মাধ্যমে ছবি ‘আপলোড’ করতে হতো। কর্মীদের দাবি, তাতে সমস্যা ছিল না। কিন্তু নভেম্বর থেকে ওই অ্যাপে নতুন প্রযুক্তি ও নতুন নিয়ম চালু করেছে গ্রামোন্নয়ন দফতর। তাতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বর্তমান আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত ২ কোটি ২৭ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। গড়ে কাজ পেয়েছেন ৫৩ দিন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নতুন প্রযুক্তি ও নিয়মে পঞ্চায়েতের গ্রাম রোজগার সেবকদের (জিআরএস) কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনটি পর্যায়ে ছবি তুলতে হবে। কাজ শুরুর আগেই প্রকল্পের জায়গার ছবি তুলে ‘আপলোড’ করতে হবে। সেখানে ‘জিও-ট্যাগ’ করে দ্রাঘিমাংশ ও অক্ষাংশ পাঠাতে হবে। তা দেখে ব্লকের যুগ্ম বিডিও পর্যায়ের আধিকারিক অনুমোদন দিলে প্রকল্পের জন্য মাস্টাররোল তৈরি করা যাবে। অর্ধেক কাজ হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের ছবি পাঠাতে হবে। সব কাজের পরে শেষ পর্যায়ের ছবি পাঠাতে হবে।
পূর্ব বর্ধমানের ১০০ দিনের কাজের আধিকারিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “নতুন সফটঅয়্যারের জন্য প্রথমেই সমস্যা হচ্ছে। আপলোড করা ছবি দেখতে পাচ্ছেন না ব্লকের আধিকারিকেরা। সে জন্য কোনও মন্তব্য তাঁরা করতে পারছেন না। ফলে, মাস্টাররোল তৈরি করা যাচ্ছে না। প্রকল্প আটকে যাচ্ছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক চিঠি দিয়েছেন।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, এমন নিয়মের কারণ, বেশিরভাগ প্রকল্পেই তথ্যপঞ্জিকা টাঙানো থাকে না। তাই কবে, কী কাজ হচ্ছে মানুষ জানতে পারেন না। সেটা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্দিষ্ট গতিতে প্রকল্প এগোচ্ছে কি না, কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্তারা তা জানতে পারবেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, “যার ভরসায় কাজে গতি আনার চেষ্টা হচ্ছে, সেই সফটঅয়্যারের সমস্যাতেই জেলার একাধিক প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে। কোথাও আবার সময়ের পরে কাজ শুরু হচ্ছে। ফলে, প্রকল্পের কাজ ঢিমেতালে চলছে।”