Biogas Project

গোবর নষ্ট নয়, গ্যাস প্রকল্পে তৈরি ছানা-ক্ষীর

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার গবাদি পশু রয়েছে। গোবরের একাংশ জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বড় অংশই খালে ফেলে দেওয়া হত। তা জমে এলাকা দূষিত ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৯:৩১
Share:

গলাতুন গ্রামের গোবর গ্যাস প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।

ছানা তৈরির করার ফাঁকে এক জন বলে উঠলেন, ‘‘বাহ! আঁচের জোর তো বেশ।’’ পাশে দাঁড়ানো কাশীনাথ ঘোষের মুখে হাসি, ‘‘সাধে কী বলছিলাম, বাড়ির গোবর নষ্ট করার দিন শেষ। আর এলাকার পরিবেশ নষ্টও হবে না।’’

Advertisement

মন্তেশ্বরের দেনুড় পঞ্চায়েতের গলাতুন গ্রামে তৈরি হয়েছে জৈব বা গোবর দিয়ে তৈরি গ্যাসের প্রকল্প। যার পোশাকি নাম, ‘গোবর্ধন প্রকল্প’। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সচিব চিরন্তন প্রামাণিকের দাবি, ‘‘রাজ্যে আমাদের জেলাতেই প্রথম এই প্রকল্প তৈরি হয়েছে। সে জন্য অন্য জেলার নির্মাণ সহায়ক থেকে রাজমিস্ত্রিরা পর্যন্ত দু’বার করে প্রশিক্ষণ নিয়ে গিয়েছেন।’’

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার গবাদি পশু রয়েছে। গোবরের একাংশ জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বড় অংশই খালে ফেলে দেওয়া হত। তা জমে এলাকা দূষিত ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছিল। সে জন্য জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগ ওই গ্রামে গোবর ব্যবহার করে গ্যাস তৈরির পরিকল্পনা নেয়। বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ (জনস্বাস্থ্য) বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে পরিকল্পনা পাঠানো হয়। এখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে। গোবর গ্যাসকে জ্বালানি করে একটি ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ছানা ও খোয়া ক্ষীর তৈরি হচ্ছে।’’

Advertisement

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, মূল প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। গোবর গ্যাস তৈরির সঙ্গে ছ’টি উনুন-সহ একটি ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। গোবর সংগ্রহের জন্য পঞ্চায়েত আট-ন’জনকে কাজে লাগিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড়শো কেজি গ্যাস তৈরি হয়। ওই ইউনিটের পাশেই কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশনের একটি ইউনিট তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, ছানা ও খোয়া ক্ষীর প্রস্তুতকারকেরা প্রতিদিন ওই ইউনিটে এসে বিনামূল্যে গোবর গ্যাস ব্যবহার করছেন। একই সঙ্গে, গ্যাস তৈরির পরে পড়ে থাকা বর্জ্য জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশনের জায়গায় কেঁচো সার তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। যা পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে থাকা সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদকে (সিএডিসি) বিক্রি করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।

দেনুড় পঞ্চায়েতের প্রধান মকদুম হোসেন বলেন, ‘‘পুরোটাই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়াও, বাড়তি গ্যাস বেলুনে করে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হবে। যাঁরা গোবর সরবরাহ করছেন, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন