Conflict at Chinakuri

দুই গোষ্ঠীর মারামারি, নেপথ্যে সাইডিং দখল?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশ পুলিশকে জানিয়েছেন, দু’পক্ষই চিনাকুড়ি রেল সাইডিংয়ের দখল পেতে মরিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চিনাকুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১৭
Share:

চিনাকুড়ির নোনিয়া বস্তিতে পুলিশ পিকেট। —নিজস্ব চিত্র।

দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি বাধল চিনাকুড়ির নোনিয়া বস্তি লাগোয়া এলাকায়। রবিবার রাতের ঘটনা। গুরুতর জখম হয়েছেন দু’পক্ষের কয়েক জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। নামানো হয় র‌্যাফ। দুই মূল অভিযুক্ত-সহ দু’পক্ষের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার অভিযুক্তদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে, তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘটনার নেপথ্যে রেল সাইডিংয়ের দখল নেওয়ার চেষ্টা থাকতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসীর একাংশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে দু’পক্ষের প্রায় কুড়ি জন যুবক নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। দু’পক্ষের হাতেই লাঠি, রড, সাইকেলের চেন, ভোজালি ছিল বলে পুলিশ স্থানীয় সূত্রে জানতে পেরেছে। দু’পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কৃষ্ণা নোনিয়া ও
অঞ্জয় পাসোয়ান।

দু’পক্ষের অশান্তিতে কিছুক্ষণের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। সাধারণ বাসিন্দাদের ছুটে পালাতে দেখা যায়। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ পৌঁছয়। নামানো হয় র‌্যাফ। লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পুলিশ পিকেটও বসানো হয় এলাকায়। ঘটনাস্থল থেকে দু’পক্ষের কয়েক জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। রাতেই অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণা ও অঞ্জয়-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশ পুলিশকে জানিয়েছেন, দু’পক্ষই চিনাকুড়ি রেল সাইডিংয়ের দখল পেতে মরিয়া। কারণ, এই সাইডিং থেকে প্রতিদিন কয়েকশো ডাম্পার লৌহ আকরিক ও অন্য নানা সামগ্রী শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় সরবরাহ করে। ডাম্পার চালক, কারখানা মালিক এবং সরবরাহকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে তোলা আদায়ের লক্ষ্যেই সাইডিংয়ের দখল পেতে চাইছে দু’গোষ্ঠী।

এ দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণা ও অঞ্জয় দু’জনই দু’টি পৃথক খুনের মামলায় অভিযুক্ত। আসানসোল আদালতে মামলা দু’টি বিচারাধীন। জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে চিনাকুড়ি দু’নম্বর এলাকায় ইসিএলের একটি পরিত্যক্ত আবাসন থেকে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় কৃষ্ণা অভিযুক্ত। ওই ঘটনার কিছু দিন পরেই চিনাকুড়ি রেল সাইডিং অঞ্চলে রেলের একটি কেবিন থেকে এক রেলকর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। সে ঘটনায় অভিযুক্ত অঞ্জয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, দিন
সাতেক ধরে এই দু’টি দলের মধ্যে অশান্তি চলছে।

পাশাপাশি, কৃষ্ণা তৃণমূল ও অঞ্জয় বিজেপি সমর্থক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসায় শুরু হয়েছে তরজাও। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সুব্রত মিশ্র বলেন, “অঞ্জয় বিজেপি কর্মী। এলাকায় সমাজসেবী বলে পরিচিত। তৃণমূল আশ্রিত সমাজবিরোধীরা ওঁকে আক্রমণ করেছে। চক্রান্ত করে ওঁকে ফাসানোর চেষ্টা হচ্ছে।” এ দিকে, তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি কাঞ্চন রায় বলেন, “কৃষ্ণা দলের কোনও পদাধিকারী নন। তবে এলাকায় তিনি তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। রবিবার রাতের ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অশান্তি। পুলিশ আইন অনুযায়ী
পদক্ষেপ করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন