Missing Diary of a cow

‘কমলি’ কোথায়, সাহায্য চেয়ে পুলিশের কাছে

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশের মাঠে গরুটিকে বেঁধে বাড়ির কাজ করছিলেন অনিতা। ঘণ্টাখানেক পরে এসে দেখেন, দড়ি সমেত উধাও গরু।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

গুসকরা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:২২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মা হতে চলেছে বাড়ির সকলের আদরের ‘কমলি।’ তাই তাকে নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই। সেই কমলি হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ায় মাথায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়েছিল গুসকরার নদীপটির বাসিন্দা অনিতা সরকারের। দিনভর খোঁজাখুজির পরেও তার সন্ধান না মেলায় বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী নেপাল ও মেয়ে সঞ্চিতাকে নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে পর্যন্ত ছুটেছিলেন অনিতা। শুক্রবার ‘কমলিকে’ ফিরে পেয়েছেন তিনি। স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। এই ‘কমলি’ চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা একটি জার্সি গরু।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৯টা। গুসকরা ফাঁড়িতে তখন ব্যস্ততা তেমন ছিল না। ছিলেন সেন্ট্রি, ডিউটি অফিসার-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মী। এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে থানায় ঢুকেছিলেন অনিতা, নেপাল আর সঞ্চিতা। আসার কারণ জানতে চাওয়ায় তাঁরা যা বলেছিলেন, তা শুনে তাজ্জব হয়ে যান পুলিশকর্মীরা।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশের মাঠে গরুটিকে বেঁধে বাড়ির কাজ করছিলেন অনিতা। ঘণ্টাখানেক পরে এসে দেখেন, দড়ি সমেত উধাও গরু। স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে কমলির খোঁজ শুরু করেন অনিতা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে সেটির সন্ধান না মেলায় শেষ পর্যন্ত তাঁরা টোটোয় চেপে সোজা হাজির হন ফাঁড়িতে।

Advertisement

অনিতা বলেন, “আলু বাছাইয়ের কাজ করে ১৪ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। ওই টাকায় মাস ছ’য়েক আগে লাল রঙের জার্সি গরুটি কিনি। এখন সেটি চার মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা।’’ অনিতা জানান, পাগলের মতো তাঁরা যখন কমলির খোঁজ করছিলেন, তখন এক জন তাঁদের বলেন, দড়ি সমেত গরুটিকে স্কুলমোড়ের দিকে আসতে দেখেছেন তিনি। তাতে তাঁদের মনে আশার উদয় হয়। তা বলে গরুর খোঁজে ফাঁড়িতে!

অনিতা বলেন, ‘‘আমাদের সকলকে মায়ার বাঁধনে বেঁধে ফেলেছে ও। কমলিকে খুঁজে না পেয়ে আমাদের মাথার ঠিক ছিল না। সে কারণেই কমলিকে খুঁজে দেওয়ার আর্জি নিয়ে পুলিশের কাছে এসেছিলাম। মনে হয়েছিল, কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার হয়তো গরুটিকে দেখে ফাঁড়িতে জানিয়েছেন। হয়তো কোনও রাস্তার মোড়ে সিসি ক্যামেরায় কমলির ছবি ধরা পড়েছে। পুলিশকর্মীরা বলেছিলেন, আশপাশের এলাকায় ভাল করে খোঁজ করতে। তার পরেও খুঁজে না পেলে সাহায্য করবেন বলে কথা দেন তাঁরা।”

রাতে ঘুম হয়নি অনিতাদের। সকালে ফের কমলির খোঁজে বেরোন তাঁরা। তখনই আসে সুখবর। কমলিকে দেখা গিয়েছে গুসকরা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতালের পিছনের মাঠে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে যান তাঁরা।

ওই ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি যমুনা শিকারী বলেন, “সকালে গরুটির মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়। মালিকের কাছে ফিরে গিয়েছে সেটি। যেটুকু শুনেছি, গরুটি সারারাত ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করেছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, গরু হারানোর কথা মুখে জানালেও অনিতা লিখিত অভিযোগ করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন