জল সংরক্ষণের জন্য বৃক্ষরোপণে বিশেষ মডেল স্কুলে

একলব্য স্কুলের পড়ুয়ারা সকলেই ছাত্রাবাসে থাকে। রান্নাঘরের বর্জ্য জল ব্যবহার করে বাগানের এক পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ‘কিচেন গার্ডেন’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০০:১০
Share:

বাগানে কাজে ব্যস্ত পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

বিশেষ পদ্ধতিতে গাছ লাগিয়ে এক দিকে ফলের বাগান তৈরি হচ্ছে। অন্য দিকে হচ্ছে জল সংরক্ষণ। কাঁকসার রঘুনাথপুরের একলব্য স্কুলে হয়েছে এমন উদ্যোগ। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে জানান, জেলার শুকনো মাটিতে একশো দিনের প্রকল্পে ‘৩০x৪০’ মডেলে গাছ লাগানোর উদ্যোগ হয়েছে। এর ফলে মাটির তলার জলস্তর ‘রিচার্জ’ করা যাবে। বৃষ্টি বা ব্যবহৃত জল ধরে রাখার মাধ্যমে জল সংরক্ষণ হবে। একলব্য স্কুলে সেই পদ্ধতিরই প্রয়োগ শুরু হয়েছে, জানান তিনি।

Advertisement

একলব্য স্কুলের পড়ুয়ারা সকলেই ছাত্রাবাসে থাকে। রান্নাঘরের বর্জ্য জল ব্যবহার করে বাগানের এক পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ‘কিচেন গার্ডেন’। সেখানে ফলছে কুমড়ো, উচ্ছে, শাক, লাউ, পেঁপে, পুঁইশাক। গত বছর বন দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ২৪০টি মেহগনি, গামার, সেগুন, নিম ইত্যাদি গাছ লাগানো হয়। স্কুল সূত্রে জানা যায়, তার মধ্যে ১৯০টি গাছ ভাল ভাবে বেড়ে উঠেছে। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় সব পড়ুয়াই গাছের পরিচর্যায় যুক্ত থাকে। এ ছাড়া সৌন্দর্যায়নের কথা মাথায় রেখে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক থেকে স্কুলে ঢোকার রাস্তার দু’ধারে এ বছর ৬৫টি গাছ লাগানো হয়েছে।

সম্প্রতি ফলের বাগান তৈরির পরিকল্পনা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আধ বিঘা জমিতে ৮০টি আমের চারা রোপণ করে গড়ে ওঠে ‘ফুলুঝানু উদ্যান’। এ ছাড়া প্রায় দু’বিঘা জমিতে আম, জাম, পেয়ারা, কাঁঠাল, কাঠবাদামের মতো নানা ফলের প্রায় ১৮০টি গাছের চারা রোপণ করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘রাসমণি উদ্যান’। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই ‘৩০x৪০’ মডেল প্রয়োগ করা হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় একশো দিনের প্রকল্পে বাগানের মধ্যে ১৫ ফুট অন্তর ৩ ফুট গভীর, ৫ ফুট লম্বা এবং ৭ ফুট চওড়া গর্ত তৈরি করার কাজ চলছে। জিপিএসের মাধ্যমে দ্রাঘিমাংশ, অক্ষাংশ মেপে গর্তের জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বৃষ্টির জল এবং ব্যবহৃত জল নর্দমা দিয়ে এসে পড়বে এই গর্তগুলিতে। জল জমে থাকবে সেখানে। এর ফলে এক দিকে গাছগুলিতে সেচের কাজ হবে, আবার ভূগর্ভে জলস্তর বাড়তেও সাহায্য করবে।

Advertisement

স্কুলের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌরব মিশ্র বলেন, ‘‘পরিবেশের প্রতি আমাদের সবার নজর দিতে হবে। আমাদের পড়ুয়ারা নিয়মিত গাছ ও বাগানের পরিচর্যা করে।’’ দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মিলন মুর্মু, একাদশ শ্রেণির হেনামণি মুর্মু থেকে অষ্টম শ্রেণির সুনীল মাড্ডি, ষষ্ঠ শ্রেণির ওয়েন হেমব্রমেরা জানায়, পড়াশোনার পাশাপাশি এ ভাবে বাগানের কাজ করার সুযোগ পেয়ে তারা খুব খুশি। কাঁকসার বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একলব্য আবাসিক স্কুল বরাবরই পরিবেশের প্রতি বিশেষ নজর দেয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন