জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ল পুলিশ ও প্রশাসন। —নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় সমস্যা বুঝে সমাধান করার জন্য নতুন কর্মসূচি শুরু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। কিন্তু সেই কর্মসূচি বৈঠকেই গন্ডগোল বাধল পূর্ব বর্ধমানের জৌগ্রামে। পথের দাবিতে রাস্তা কেটে প্রতিবাদে সরব হলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জামালপুর ব্লকের জৌগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম টেঙ্গাবেড়িয়া। শতাব্দী প্রাচীন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ওই গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা পবিত্র পাইক, রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, তপন মালিকেরা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গা ঘেঁষে গ্রামের প্রধান রাস্তাটি গিয়েছে। সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার দীর্ঘ ওই রাস্তা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বেহাল।’’ তাঁদের দাবি, রাস্তার হাল ফেরাতে অনেক বার ব্লক প্রশাসন ও জৌগ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে আবেদন এবং নিবেদন করেছেন। কিন্তু মিলেছে কেবল আশ্বাস। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘পথশ্রী প্রকল্পে সর্বত্র রাস্তা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের ব্যবহারের রাস্তা তো হতশ্রী! এত দিনেও সমাধান হল না কেন?’’ মঙ্গলবার এই ক্ষোভই আছড়ে পড়ে প্রশাসনের কর্তাদের উপর। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সামনেই কোদাল দিয়ে রাস্তায় গর্ত খুঁড়লেন গ্রামবাসীরা। রাস্তা পেরিয়ে ও পারে যেতেই পারলেন না প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের অনেক আবেদন এবং আশ্বাসের পর আবার খুঁড়ে ফেলা রাস্তা বুজিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ ও গন্ডগোল নিয়ে পবিত্র পাইক নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘আমাদের টেঙ্গাবেড়িয়া গ্রামে বুথ দু’টি । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটি বুথে তৃণমূল এবং অপরটিতে বিজেপি প্রার্থী জিতেছেন। যে বুথে বিজেপি প্রার্থী জিতেছেন, সেখানে কাজ হচ্ছে না। আমাদের রাস্তা সারাতে অনীহা তৃণমূল পরিচালিত জৌগ্রাম পঞ্চায়েতের। সেটা আর আমাদের বুঝতে বাকি নেই।’’
পঞ্চায়েতের প্রধান মল্লিকা মণ্ডল এবং উপপ্রধান সাজাহান মণ্ডল হাজির ছিলেন ‘সমাধান’ কর্মসূচিতে। অভিযোগ, পথের দাবি জানানোয় তাঁরা প্রথমে জানান, এখন সংস্কার সম্ভব নয়। তাতেই বাসিন্দাদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। রাস্তার দাবিতে রাস্তার দুই প্রান্ত আড়াআড়ি ভাবে কেটে দেন তাঁরা। শেষমেশ বিডিও রাহুল বিশ্বাস রাস্তা সংস্কার হবে বলে কথা দেওয়ার পরে কাটা রাস্তা বুজিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। পঞ্চায়েত প্রধান মল্লিকার যুক্তি, ‘‘টেঙ্গাবেড়িয়া গ্রামের একটি বুথে বিজেপি জিতেছে বলে আমরা ওই গ্রামের রাস্তা সংস্কার হতে দিচ্ছি না, এই অভিযোগ সত্য নয়।’’ প্রধান জানান, টেঙ্গাবেড়িয়া গ্রামের ওই রাস্তাটি ইতিমধ্যে ‘পথশ্রী-১’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেটা বোঝানোর পরেও অনেকে বুঝতে চাননি। বরং রাস্তা কাটার পিছনে রাজনীতি রয়েছে বলে দাবি পঞ্চায়েত প্রধানের।