খুনের বিচারে প্রভাব পড়বে না

পরকীয়া-সম্পর্ক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না, রায়ে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি খুনের প্রধান কারণ হিসেবে পরকীয়া-সম্পর্ককেই দায়ী করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পরকীয়া-সম্পর্ক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না, রায়ে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি খুনের প্রধান কারণ হিসেবে পরকীয়া-সম্পর্ককেই দায়ী করেছেন তদন্তকারীরা। সেই সব মামলার ক্ষেত্রে এই রায় কোনও রকম প্রভাব ফেলবে না বলেই জানালেন দুর্গাপুরের আইনজীবীরা।

Advertisement

২০১৫-র ২৯ অগস্ট। প্রেমিকা সুচেতা চক্রবর্তী ও তাঁর মেয়ে দীপাঞ্জনাকে খুনের অভিযোগ ওঠে দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সমরেশ সরকারের বিরুদ্ধে। খুনের পরে সুচেতা ও দীপাঞ্জনার দেহ টুকরো করে ব্যাগে ভরে তা মাঝগঙ্গায় ফেলতে গিয়ে ধরা পড়েন সমরেশ। এই মামলা এখন শ্রীরামপুর আদালতে বিচারাধীন।

২০১৭-র ২৩ মে। বেনাচিতির উত্তরপল্লির ভাড়াবাড়িতে স্ত্রী রেজিনা বেগমকে (৩০) খুন করে উঠোনে পুঁতে মার্বেল বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামী, পেশায় রাজমিস্ত্রি হায়দার শেখের বিরুদ্ধে। তদন্তকারীদের দাবি, এ ক্ষেত্রেও হায়দার তাদের কাছে জানায়, নানুরের নিমরা গ্রামের এক বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে রেজিনার সম্পর্ক ছিল। তার জেরেই খুন। এই মামলাও বিচারাধীন।

Advertisement

সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮-য়। মেজিয়ার তরুণী শিল্পা অগ্রবালকে খুনের অভিযোগ ওঠে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে। বেনাচিতিতে একটি বহুতলে একই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ফুলঝোড় শাখার সহকারী ম্যানেজার স্ত্রী মনীষা কুমারীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন রাজীব। চার বছরের মেয়ে থাকত রাঁচীতে মামাবাড়িতে। কাজের সূত্রে ‘ব্যাঙ্কমিত্র’ শিল্পার সঙ্গে রাজীবের পরিচয় ও পরে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে তদন্তকারীরা জানান। ওই বছরই ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ রাজীবের ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে ট্রলি ব্যাগে ভরা শিল্পার দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় রাজীব স্বীকার করে নেন, বিয়ের জন্য জোর করাতেই শিল্পাকে খুন করেন তিনি।

কিন্তু খুনের মতো ঘটনা ছাড়াও পরকীয়া সম্পর্ককে এত দিন ‘অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করা হত। তা যুক্তিসঙ্গত ছিল না বলেই মনে করছেন শহরের আইনজীবীদের একাংশ। এক আইনজীবীর কথায়, ‘‘জেলে যাওয়ার ভয়ে বিয়ে টিকিয়ে রাখতে হলে সেখানে সম্পর্কের দায়বদ্ধতা থাকে না। তা হলে সে বিয়েও তো তখন অর্থহীন হয়ে পড়ে।’’ দুর্গাপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবব্রত সাঁই বলেন, ‘‘পরকীয়ার জন্য এত দিন পাঁচ বছরের জেল হত। পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে না, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় যুগান্তকারী। তবে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া অপরাধমূলক কাজকর্মের তদন্ত বা বিচারের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন হবে না। সব আগের মতোই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন