কাজিনুর শেখ। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি বাড়ি কাপড় ফেরি করে কোনওমতে সংসার চলে। কোনওদিন দু’বেলা পেট পুরে খাবারও জোটে না। তবে সে সব বাধা ভাল ফলের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার মল্লিকপুরের কাজিনুর হোসেন শেখ। পাঁচপাড়া হাইমাদ্রাসার ছাত্র কাজিনুর এ বার মাদ্রাসা বোর্ডে মাধ্যমিকের পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে নবম স্থান পেয়েছে।
কাজিনুরের বাবা জাকির হোসেন শেখ বাড়ি বাড়ি কাপড় ফেরি করেন। মাঝেসাধঝে সাহায্য করে কাজিনুরও। দিন গেলে হাতে আসে মাত্র একশো থেকে দেড়শো টাকা। ফি দিন দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে মাদ্রাসায় যেত সে। জাকিরের আক্ষেপ, ‘‘অর্থের অভাবে ছেলেকে একটা সাইকেল পর্যন্ত কিনে দিতে পারিনি।’’
বাড়ির কাজকর্ম সামলে মাত্র ঘণ্টা চারেক সময় থাকত পড়াশোনার জন্য। পড়ার ফাঁকে অবশ্য ফুটবল ভারি পছন্দ কাজিনুরের। মঙ্গলবার ফলপ্রকাশের পরে গর্বিত প্রধান শিক্ষক আসিবুর রহমান বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষায় সব রকম ভাবে ওখে সাহায্য করব।’’ কাজিনুর জানায়, আগামী দিনে সে চিকিৎসক হতে চায়।
শাড়ির খুঁটে চোখ মুছতে মুছতে মা কোহিনুর বিবি অবশ্য বলেন, ‘‘চেয়েচিন্তে হলেও ছেলেকে চিকিৎসক করবই।’’ মায়ের এই প্রতিজ্ঞাটাই ভরসা কাজিনুরের।