বাড়ি ফিরে পাবেন কবে, সংশয়ে বৃদ্ধ

খাগড়াগড়ের ওই বাড়ির দোতলায় ঠিক ৩ বছর আগে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দু’জনের। ২০১৪-র ২ অক্টোবর সেই ঘটনার সূত্র ধরে এ রাজ্যের নানা জেলায় জেহাদি নেটওয়ার্কের হদিস পায় এনআইএ। বিচারপর্ব শেষ হতে বছর দশেক লাগবে। তার আগে ওই বাড়ি ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৬
Share:

হাসান চৌধুরী

চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে দোতলা বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। পরিকল্পনা ছিল, সেটি ভাড়া দিয়ে সংসারের খরচ মিটবে। কিন্তু ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে সব। গুনতে হচ্ছে ভুলের মাসুল, দাবি বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাড়ি মালিক মহম্মদ হাসান চৌধুরীর।

Advertisement

খাগড়াগড়ের ওই বাড়ির দোতলায় ঠিক ৩ বছর আগে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দু’জনের। ২০১৪-র ২ অক্টোবর সেই ঘটনার সূত্র ধরে এ রাজ্যের নানা জেলায় জেহাদি নেটওয়ার্কের হদিস পায় এনআইএ। বিচারপর্ব শেষ হতে বছর দশেক লাগবে। তার আগে ওই বাড়ি ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।

ওই বাড়ির ঠিক উল্টো দিকেই আর একটি বাড়ি রয়েছে পূর্ত দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হাসান চৌধুরীর। সপরিবার সেখানেই থাকেন ৭৬ বছরের বৃদ্ধ। তিনি জানান, অবসর নেওয়ার পরে ২০০২ সালে দ্বিতীয় বাড়িটি তৈরি করা শুরু করেন। কাঠাখানেক জায়গায় চার লক্ষ টাকা খরচে ২০০৮ সালে বাড়ি তৈরি শেষ হয়। দোতলা বসবাসের ও একতলা দোকানঘরের জন্য ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। নীচে একটি ঘরে তাঁর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ছেলে আসরফ চৌধুরী চেম্বার করেন। খাতায়-কলমে তিনিই বাড়ির মালিক।

Advertisement

সেই বাড়ি।

রবিবার দুপুরে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণস্থলের উল্টো দিকের বাড়িতে বসে হাসান চৌধুরী জানান, ঘটনার মাস তিনেক আগে শাকিল গাজি (বিস্ফোরণে নিহত), কওসররা বাড়ি ভাড়া নিতে চায়। কিন্তু পরিচয়পত্র না থাকায় তিনি ফিরিয়ে দেন। বৃদ্ধের দাবি, ঘটনার পর থেকে সংসারে আর্থিক টানাটানি। তিনি বলেন, ‘‘আগে নাতনির দু’জন গৃহশিক্ষক ছিলেন। এখন এক জন। স্ত্রীর মাসে প্রায় পনেরো হাজার টাকার ওষুধ লাগে। তার বড় অংশ আসত ওই বাড়ি ভাড়া থেকে। সেটা পেলে এই অবস্থা হতো না। নীচে দোকানঘরগুলি খোলার অনুমতি পেলেও কিছু সুরাহা হয়।’’ আসরফের দাবি, ঘটনার পর থেকে চেম্বারেও বিশেষ পসার নেই।

এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচার চলাকালীন বাড়ি সরেজমিনে দেখার প্রয়োজন হতে পারে। তাই সেটি ফেরানো মুশকিল। হাসানের আক্ষেপ, ‘‘যে ভুল করেছি, জীবদ্দশায় বাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা নেই!’’

ছবি: উদিত সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন