সুপারের কাছে ক্ষোভ জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র।
এই হাসপাতালে প্রসূতিদের ভর্তি হওয়ার সংখ্যা তলানিতে। তাই অস্ত্রোপচার করে প্রসব বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার বুদবুদের মানকর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপারের ঘরে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ।
এ দিন বিক্ষোভকারীর জানান, মানকরের হাসপাতালটিতে শয্যার সংখ্যা ৩০টি। রয়েছেন পাঁচ জন চিকিৎসক। হাসপাতালে রয়েছে শিশুবিভাগ, প্রসূতি বিভাগ। গলসি ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম, আউশগ্রাম ২, কাঁকসা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারাও ভরসা করেন এই হাসপাতালটির উপরেই। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে প্রসব বন্ধ হলে সমস্যায় পড়বেন বাসিন্দারা। রাতবিরেতে বিপদ আরও বাড়বে। মানকর গ্রামের বাসিন্দা সীতারাম গোস্বামী, পাঁচুগোপাল মুখোপাধ্যায়, তন্ময় গোস্বামীদের অভিযোগ, ‘‘এমনিতেই হাসপাতালে পরিষেবা, ওষুধ ঠিক মতো পাওয়া যায় না। কথায় কথায় বর্ধমান বা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। তার উপরে এমন নির্দেশের ফলে গোটা এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা তলানিতে ঠেকবে।’’ সুপারের ঘরে বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতেই বাসিন্দারা জানান, হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর ও স্বাস্থ্য দফতরে দাবিপত্র পাঠানো হবে। ঘণ্টা দু’য়েক বাদে পুলিশি হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে।
মানকর গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৮ তারিখ স্বাস্থ্য দফতর থেকে নির্দেশ আসে, এখানে শুধুমাত্র সাধারণ ভাবেই প্রসব হবে। বন্ধ করতে হবে অস্ত্রোপচার করে প্রসব (কম্প্রিহেনসিভ এমার্জেন্সি ওবস্টেট্রিক কেয়ার সার্ভিস বা সিমক)। আসানসোল জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের কাছে রিপোর্ট রয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে ওই হাসপাতালে প্রসূতিদের ভর্তির হার তলানিতে ঠেকেছে। এর তুলনায় গলসি ১ নম্বর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সংখ্যাটা অনেক বেশি। তাই সিমক পরষেবা মানকরের হাসপাতালটিতে বন্ধ করা ও গলসিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।’’
সিজার ডেলিভারির পরিষেবা ফের চালুর দাবিতে বিজেপির তরফেও এ দিন হাসপাতাল সুপার অসিত কুমার সিংহের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিজেপি নেতা নরেশ কোনারের দাবি, ‘‘এলাকার বেশির ভাগ মানুষের পক্ষেই বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানো কঠিন।’’ যদিও সুপার অসিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ দিনের পুরো বিষয়টি জানিয়েছি। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাঁরাই নেবেন।’’