জামুড়িয়ায় শিবির

লাভজনক চাষের দিশা মাটি পরীক্ষায়

প্রতিটি জলের বিন্দু থেকে আরও বেশি ফসল ফলানো কী ভাবে সম্ভব, সে বিষয়ে কৃষি সচেতনতা শিবির আয়োজিত হল জামুড়িয়ায়। এই সভায় ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ তথা কর্মসূচির আহ্বায়ক দীপঙ্কর গড়াই ও নানা বিভাগের আধিকারিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৯
Share:

শিবিরে বাবুল সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র

প্রতিটি জলের বিন্দু থেকে আরও বেশি ফসল ফলানো কী ভাবে সম্ভব, সে বিষয়ে কৃষি সচেতনতা শিবির আয়োজিত হল জামুড়িয়ায়। পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এই সভায় ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ তথা কর্মসূচির আহ্বায়ক দীপঙ্কর গড়াই ও নানা বিভাগের আধিকারিকেরা। এই শিবির নিয়ে অবশ্য বিজেপি-তৃণমূলের চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে।

Advertisement

কৃষি দফতরের তরফে জানানো হয়, জামুড়িয়ায় দশ হাজার ছ’শো একর কৃষিজমি আছে। বৃষ্টি নির্ভর হওয়ায় চাষ হয় বছরে এক বার। দূষণের কারণে বছর পাঁচেক অনেক জমিতে ফসল ভাল হয়নি বলে অভিযোগ। কী ভাবে এই জমিতে সারা বছর চাষ সম্ভব, সে বিষয়ে ধারণা দিতেই এই শিবিরের আয়োজন। বাবুল বলেন, ‘‘কৃষি নিয়ে কেন্দ্রের যে ভাবনা, তা রূপায়ণের অঙ্গ হিসেবেই এই শিবির।’’

বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রথমে মাটি পরীক্ষা করতে হবে। প্রতি বিঘা জমির চার পাশে ও মাঝে ৫টি ছ’ইঞ্চির গর্ত খুঁড়ে সেগুলি থেকে মাটি বের করে মিশিয়ে ফেলতে হবে। এর পরে আধ কিলোগ্রাম মাটি পরীক্ষার জন্য কৃষি কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। এক মাসের মধ্যে কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে, কোন জমিতে কেমন ফসল লাভজনক হবে।

Advertisement

দীপঙ্করবাবু জানান, ৫০ হাজার কোটি টাকা ‘কৃষি সিচাই যোজনা’র জন্য বরাদ্দ করে ২০২২ সালের মধ্যে প্রতি জমি থেকে কৃষকের আয়ের ব্যবস্থার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। জলবিভাজিক তৈরি, বর্ষার জল ধরে রাখা, ক্ষুদ্র সেচের ব্যবস্থা, বিন্দু ও ফোয়ারা সেচ, ব্যক্তিগত জলাশয় পুনর্গঠন বা সংস্কার, পরম্পরাগত কৃষির বিকাশ, জৈব চায়ের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যপূরণে প্রধানমন্ত্রী কৌশল যোজনা, ফসল বিমা যোজনা, কৃষি সিচাই যোজনা তৈরি হয়েছে।

এ দিন কৃষির পাশাপাশি মাছ চাষ নিয়েও সচেতন করা হয়। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, একশো জন চাষি যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে জনা পঞ্চাশ মাটি পরীক্ষা করার জন্য আবেদনপত্র জমা দেন। সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আগামী শুক্রবার মাটির নমুমা সংগ্রহ করে পাঁচ প্রতিনিধির কাছে জমা দিতে বলেন তাঁদের।

শিবির আয়োজন নিয়ে বাবুল শাসকদলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা বাহাদুরপুর পঞ্চায়েত সমিতির হলে এই শিবির করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই জামুড়িয়া শহরে করতে হল।’’ জামুড়িয়ার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘অনুমতি না দেওয়ার প্রশ্ন নেই। ওঁরা প্রথমে হল চাইলেও পরে নিজেরাই জানান, অন্যত্র ব্যবস্থা করছেন।’’

পাল্টা রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলও। যে পাঁচ প্রতিনিধির কাছে মাটি জমা দিতে বলা হয়, তাঁরা সবাই এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাশন দাবি করেন, “এটা সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতি। পঞ্চায়েত ভোটে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই সাংসদ এমন করেছেন।” দীপঙ্করবাবু অবশ্য বলেন, “শিবিরে এলাকায় পরিচিত মুখ দেখেই নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতির প্রশ্ন নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন