Corruption

রেশন কার্ডে দুর্নীতির নালিশ সভাপতিরও

তৃণমূলের বিরুদ্ধে রেশন কার্ড লুকিয়ে রেখে দুর্নীতির অভিযোগ করেন বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৫:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি

মাস দুয়েক আগে কালনার কল্যাণপুর এলাকায় তৃণমূল কার্যালয়ে মিলেছিল বেশ কিছু রেশন কার্ড। দিন কয়েক আগে বড়ধামাস পঞ্চায়েতের বালিন্দর গ্রামের এক পরিবারের হাতেও গ্রামের এক জন পৌঁছে দেন চার বছর আগে তৈরি হওয়া রেশন কার্ড। এই দুই ঘটনার পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে রেশন কার্ড লুকিয়ে রেখে দুর্নীতির অভিযোগ করেন বিরোধীরা। এ বার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের নীলিমা কপ্তি। সোমবার কালনা মহকুমাশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।

Advertisement

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবি, বড়ধামাস পঞ্চায়েতের তরফে ওই কার্ড বিলি করা হয়নি। এ ধরনের ঘটনায় পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। আরও বহু গ্রামেও গোপনে কার্ড পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। যে ব্যক্তি ওই গ্রামে কার্ড পৌঁছে দিয়েছিলেন তাঁর দাবি, এক জন এসে কার্ডগুলি রাস্তায় পড়ে আছে বলে তাঁর হাতে দেয়।

এক পাতার চিঠিতে নীলিমাদেবীর দাবি, যাঁদের রেশন কার্ড নেই, তাঁদের ‘ফুড কুপন’ দিতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা হচ্ছে। কারণ, তাঁদের রেশন কার্ড আগেই তৈরি হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে লুকিয়ে রাখা রেশন কার্ডগুলি উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ তাঁর। ব্লক প্রশাসনের একাংশ এই ঘটনায় জড়িত বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। মহকুমাশাসককে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৫-১৬ সালে তৈরি হওয়া বেশ কিছু রেশন কার্ড তিনি সংগ্রহ করেছেন। প্রয়োজনে তা দেখাতেও পারবেন।

Advertisement

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, ‘‘কাজ করার জন্য মানুষ আমাদের নির্বাচিত করেছেন। সরকার মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার জন্য রেশনকার্ড তুলে দেয়। এক শ্রেণির লোকজন মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য রেশনকার্ডগুলি নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিলেন, এটা জানার পরে চুপ থাকি কী করে!’’

যদিও ব্লক প্রশাসনের দাবি, রেশন কার্ড বিলি বা দেওয়ার সঙ্গে ব্লক প্রশাসনের সরাসরি কোনও যোগ নেই। বিডিও (কালনা ২) মিলন দেবগড়িয়া বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ থাকলে তবেই খাদ্য দফতরকে সাহায্য করা হয়।’’

শাসক দলের তরফে দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়ায় নড়ে বসেছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি ধনঞ্জয় হালদার এ দিন বলেন, ‘‘আমরা তো অনেক দিন ধরেই রেশন নিয়ে দুর্নীতির কথা বলে আসছি। প্রশাসন সঠিক ভাবে তদন্ত করুক, তাহলেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরোবে।’’ কংগ্রেসের মহকুমা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলও জানান, রেশন নিয়ে দুর্নীতির নানা দিক তুলে ধরে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি বলেন, ‘‘বিষয়টি খাদ্য দফতর দেখবে।’’ মহকুমা খাদ্য নিয়ামক অভিজিৎ বেজের বক্তব্য, ‘‘আমরা পুরনো রেশনকার্ড বিলি করিনি। রেশন কার্ড বিলি করলে রেজিস্টারে সই করিয়ে উপভোক্তাকে কার্ড দেওয়া হয়। অভিযোগ হাতে এলে কী ভাবে, কোথা থেকে রেশন কার্ড পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে তদন্ত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন