বৃষ্টি কম, তবে বিপদ কাটেনি

বুধবার সন্ধ্যায় জামালপুরের অমরপুর গ্রামে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সভাধিপতি দেবু টুডু, কর্মাধ্যক্ষ গার্গী নাহা, শান্তনু কোনার, জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী নমিতা রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

জলপথ: জলের তোড়ে রাস্তা ভেঙেছে আতাপুরে। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি ধরেছে। তবে বিপদ কাটেনি জেলায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দামোদর, অজয়, ভাগীরথী তিন নদীই প্রাথমিক বিপদসীমার কাছ দিয়ে বয়েছে। মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে মাধবডিহি থানার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আবার জামালপুরের অমরপুরের কাছে দামোদরের বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে গ্রামে। বেশ কিছু গ্রামে দামোদরের জল ঢোকা আটকাতে বিকেলের পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশ, গাছের গুঁড়ি ফেলে বাঁধ মজবুত করতেও শুরু করেছেন।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, টানা বৃষ্টি ও ছাড়া জলে ১১টি ব্লকের ৪৮টি গ্রাম ও ২টি পুরসভার এলাকা জলমগ্ন। এখনও পর্যন্ত ৩৮৯টি বাড়ি ভেঙেছে, আংশিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ১৯৬৮টি বাড়ি। ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে রায়না ২, জামালপুর, কাটোয়া পুরসভা, বর্ধমান ১ ব্লকে।

বুধবার সন্ধ্যায় জামালপুরের অমরপুর গ্রামে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সভাধিপতি দেবু টুডু, কর্মাধ্যক্ষ গার্গী নাহা, শান্তনু কোনার, জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী নমিতা রায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, রাস্তাঘাটের উন্নতি নেই। বাঁধ সংস্কার হয় না। অপরিকল্পিত ভাবে বালি তোলার ফলেই বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। সারা বছর কর্তাদের দেখা না মেলা, জামালপুরের প্রাক্তন বিধায়কের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ জানান তাঁরা। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওই এলাকার মানুষ পঞ্চায়েত সমিতির কাজকর্মে চরম রেগে রয়েছেন, সে কথা সভাধিপতিকে জানানো হয়েছিল। তবে ক্ষোভের মুখে পড়েও পরিস্থিতি সামাল দেন সভাধিপতি। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মেহেমুদ খান বলেন, “সভাধিপতির নির্দেশে বাসিন্দাদের শিবিরে রাখা হয়েছে।” জলের পাউচ পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

পরিস্থিতি খারাপ দামোদর লাগোয়া গলসির কিছু এলাকায়। ১০০ দিনের কাজে গোহগ্রাম পঞ্চায়েত দামোদরের উপর বাঁধ দিয়েছিল। এ দিন বাঁধের গায়ে জল উঠে আসায় গ্রামবাসীরা বাঁশ-গাছের গুঁড়ি ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালান। তাঁদের দাবি, ১০টি বাড়ি নদীর কোলে ঝুলছে। মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) মুফতি মহম্মদ শামিম বলেন, “ওই বাসিন্দাদের উদ্ধার করে উঁচু জায়গায় আনার চিন্তা ভাবনা চলছে।” তবে কুনুর নদীর জল কমতে থাকায় আপাতত ভাতার-আউশগ্রাম বিপদমুক্ত বলেও তাঁর দাবি।

কেতুগ্রাম ১ ব্লকের মাঝিনা, মৌরি, হলদি, চেঁচুড়ি এলাকায় বহু জমি খড়ি নদীর জলে ডুবলেও বাড়িতে জল ঢোকেনি। কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরিতে ব্লক কার্যালয়ের সামনে অবশ্য জল জমেছিল। বন্দর, মুরুন্দি, গোয়ালপাড়া, শাঁখাই, মৌগ্রাম ও উদ্ধারণপুরে রাস্তায় জল জমে থাকায় যাতায়াতে মুশকিল হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন