শোকগ্রস্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র
কথা ছিল, সকালে ফোন করবেন ছেলে। ফোন এল, তবে ছেলের ঊর্ধ্বতন এক আধিকারিকের। জানালেন, ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে! পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির শীতলপুরের বাসিন্দা সেনাকর্মী অভিষেক রায়ের (২৮) মৃত্যু সম্পর্কে এমনটাই জানানো হয়েছে বলে দাবি করলেন তাঁর পরিবার। অভিষেক কাশ্মীরে কর্মরত ছিলেন।
অভিষেকের বাড়ি, শীতলপুরের খনি আবাসনে। সেখানে বসেই তাঁর বাবা খনিকর্মী অশোকবাবু বলেন, ‘‘শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ কাশ্মীরের সেনা ছাউনি থেকে এক আধিকারিক ফোনে জানান, ছেলে রাত ১টায় নিজের সার্ভিস রিভলবার থেকে গুলি করেছে নিজেকে। রাতের ঘটনা এত পরে কেন জানানো হল, তা জানতে চাই আমি। তবে কোনও উত্তর মেলেনি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এর নেপথ্যে কোনও চক্রান্ত রয়েছে বলেই আমাদের ধারণা। ছেলের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। তদন্ত চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত আর্জি জানাব।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১-য় কাজে যোগ দেন অভিষেক। তিনি সেনাবাহিনীতে ‘সিগন্যাল ম্যান’ পদে কর্মরত ছিলেন। বছর দুয়েক আগে অভিষেকের বদলি হয় কাশ্মীরে।
শনিবার অভিষেকের বাড়িতে এলাকাবাসীর জটলা। কাঁদতে কাঁদতে অভিষেকের মা গীতাদেবী বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত সওয়া ৯টাতেও ছেলের সঙ্গে কথা ছিল। বলেছিল, সকালে ফোন করবে। এক বারও মনে হয়নি ও কোনও সমস্যায় আছে।’’
পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, চলতি বছরের মার্চে অভিষেকের বাড়ি আসার কথা ছিল। সেই সময়ে ছেলের বিয়ে নিয়েও কথাবার্তা হওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে জানান অশোকবাবু। ঘটনার কথা শুনে বাড়িতে এসেছিলেন অভিষেকের বন্ধুরাও। তাঁদেরই এক জন প্রণয় চক্রবর্তী জানান, শুক্রবার রাত দেড়টায় ‘ভিডিয়ো কলিং’য়ে কথা হয়েছে অভিষেকের সঙ্গে। এমনকি, তখন তিনি পাড়ার ক্রিকেট প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির কথাও জিজ্ঞাসা করেছিলেন বলে দাবি।