জোগানে টান, চড়ছে আলুর দর

পেঁয়াজের পরে, এ বার জেলায় চড়ছে আলুর দরও। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ২৪ থেকে ২৬ টাকা দরে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

জেলায় চড়ছে আলুর দরও। —ফাইল ছবি

পেঁয়াজের পরে, এ বার জেলায় চড়ছে আলুর দরও। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ২৪ থেকে ২৬ টাকা দরে। খুচরো ব্যবসায়ীদের বড় অংশের দাবি, আলুর জোগান তুলনামূলক কম। ফলে, ‘কালোবাজারি’ শুরু হয়েছে।

Advertisement

ব্যবসায়ীদের একটি অংশ জানান, গত বছর জেলায় আলুর উৎপাদন কম হয়েছিল। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-য় জেলায় ২ কোটি ৯৮ লক্ষের মতো আলুর প্যাকেট (৫০ কেজির) হিমঘরে ঢুকেছিল। চলতি বছরে ২ কোটি ৫৫ লক্ষের কিছু বেশি আলুর প্যাকেট হিমঘরজাত হয়। গত বছর এই সময়ে হিমঘর থেকে আলু বেরিয়েছিল ৭৪.৮৫ শতাংশ। আর এ বছর হিমঘর থেকে সব আলুই বেরিয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে বীজের জন্য কিছু আলু হিমঘরের চাতালে পড়ে রয়েছে।

ফলে, হিমঘর থেকে আলু বেরনোর শেষ পর্ব থেকেই চাহিদা ও জোগানের পার্থক্যে আলুর দর বাড়ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পঞ্জাব থেকে আলু আমদানি শুরু হয়। কিন্তু রাজ্যে সাম্প্রতিক ‘অশান্তি’র জেরে আলুর গাড়ি ঢুকতে ‘ভয়’ পাচ্ছে। তাই বাজারে জোগান বাড়ছে না, দাবি ব্যবসায়ীদের একাংশের।

Advertisement

প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সম্পাদক (বর্ধমান) সুনীল ঘোষের দাবি, “গত কয়েক বছরে ব্যবসায়ী ও চাষি আলুর দাম পাননি। প্রাকৃতিক কারণে গত বছর আলুর উৎপাদন কম হয়। এ বার ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে আলু চাষ পিছিয়েছে। এ বার চাষিরা দাম পেলেও জোগান কম থাকায় আলুর দর বাড়ছে। পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে আলুর দাম কমার ইঙ্গিত নেই।’’ অন্য বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকেই ‘পোখরাজ’ জাতের আলু বাজারে ভাল ভাবেই চলে আসে। কিন্তু এ বার ‘বুলবুলের’ প্রভাবে তা-ও সে ভাবে হচ্ছে না। ওই জাতের ‘নতুন’ আলু বাজারে এসেছে, তা-ও বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন বাজারে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীদের একাংশও জানান, দিনকয়েক আগেও প্রতি ‘প্যাকেট’ আলু সাড়ে আটশো টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। মঙ্গল ও বুধবার পাইকারি বাজারে তা বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৯০০ ও ৯৫০ টাকায়। বৃহস্পতিবার সকালে খুচরো ব্যবসায়ীরা প্রতি প্যাকেট কিনেছেন ১,০২৫ টাকায়। খুচরো ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ধারণা, দরের ওঠানামাই আরও চড়া দামের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তবে রাজ্য সরকারের দাবি, সপ্তাহখানেকের মধ্যে আলুর দাম কমতে পারে। কৃষি বিপণন দফতর জানায়, পঞ্জাবের আলু বাংলায় ঢুকতে শুরু করে। কিন্তু গত কয়েকদিন পঞ্জাবে টানা বৃষ্টিতে আলু তোলার কাজ পিছিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘সুফল বাংলায় ১৭ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে। সামনের সপ্তাহ থেকে আলুর দাম কমতে পারে। যে ভাবে আলুর দাম বাড়ানো হচ্ছে তা দুঃখজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন