গাড়িতে তুলে চম্পট, উদ্ধার করল পুলিশ

বুধবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ভিড়িঙ্গি মোড়ের কাছে অপহরণের ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, সেজামল শেখ নামে ওই ‘অপহৃত’ পেশায় রাজমিস্ত্রি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৪৩
Share:

সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে এই গাড়িটির ছবি।

সন্ধ্যায় জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড ধরে যাচ্ছিলেন মোটরবাইক আরোহী। আচমকা চলন্ত বাইকের সামনে এসে দাঁড়ায় একটি গাড়ি। সেটি থেকে কয়েকজন নেমে এসে বাইক আরোহীকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। ঘটনা দেখে পুলিশে খবর দেন আশপাশের লোকজন। গাড়ির নম্বরও জানিয়ে দেন তাঁর। সেই নম্বর, সিসিটিভি ফুটেজ এবং ‘অপহৃতের’ মোবাইল নম্বরের অবস্থান অনুসরণ করে ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। ওই বাইক আরোহীকে উদ্ধারের পাশাপাশি, অপহরণে অভিযুক্ত দু’জনকে ধরা হয়েছে।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ভিড়িঙ্গি মোড়ের কাছে অপহরণের ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, সেজামল শেখ নামে ওই ‘অপহৃত’ পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি থাকেন কোকআভেন থানার ভগৎপল্লিতে। রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বীরভূমের লাভপুর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ভিড়িঙ্গি মোড়ে ওই সময়ে ট্র্যাফিক সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার গৌরাঙ্গ গড়াই। তাঁকে এলাকার কয়েকজন খবর দেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সার্ভিস রোড থেকে একটি গাড়িতে এক জনকে অপহরণ করে আসানসোলের দিকে নিয়ে গেল কয়েকজন। তাঁরা সাদা রঙের গাড়িটির নম্বরও দেন। মোটরবাইকটি পড়ে ছিল রাস্তার ধারে। সেটি উদ্ধার করে ফরিদপুর ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বাইকে থাকা নথিপত্র পরীক্ষা করে সেজামলের নাম জানা যায়। তিনি ভগৎপল্লিতে থাকলেও তাঁর বাড়ি আদতে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের ছোটকালিয়া গ্রামে। ভিড়িঙ্গি মোড়ে থাকা ‘সিসিটিভি’ (‌ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ‘ফুটেজ’ পরীক্ষা করা হয়। অপহৃতের মোবাইলের নেটওয়ার্কও অনুসরণ করতে থাকে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাড়িটি লাভপুরের এক বাসিন্দার। সাঁইথিয়া, বোলপুর ও লাভপুর থানাকে খবর দেওয়া হয়। রাস্তায় নাকাবন্দি শুরু হয়। দুর্গাপুর থেকে পুলিশের একটি দল লাভপুরে যায় গাড়ির মালিকের খোঁজে। লাভপুরের শাসপুর থেকে ধরা হয় শেখ আনন্দ ওরফে শেখ আজাদ ও জান মহম্মদ কাজি নামে দু’জনকে। ধৃতদের জেরা করে উদ্ধার করা হয় অপহৃতকে। পুলিশ জানায়, আর এক জনের খোঁজ চলছে।

পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, এক অভিযুক্তের স্ত্রীকে প্রায় ২০ দিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। লাভপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই অভিযুক্ত জেরায় তাদের কাছে দাবি করেছে, সেজামলের এক প্রতিবেশী ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছে তার স্ত্রীকে। সেজামল সব জেনেও তাতে বাধা দেননি। তাঁকে চাপ দিয়ে ওই প্রতিবেশীর খোঁজ পাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। সে জন্য ফোনে তাঁকে কাজের বরাত দেওয়ার নাম করে বুধবার সন্ধ্যায় দেখা করতে বলা হয়। নির্দিষ্ট জায়গার কাছাকাছি পৌঁছতেই তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তিন জন।

আসানসোল-দুর্গাপুরের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘ঘটনার ছ’ঘণ্টার মধ্যে অপহৃতকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও তথ্য পেতে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। আর এক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন