কালনায় ফের চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালনা মহকুমায় এই ধরনের ঘটনা এ নিয়ে পাঁচ বার ঘটল। দিনেরবেলা নানা অছিলায় বাড়িতে ঢুকে পড়ছে এক দুষ্কৃতী। তার নিশানা বয়স্ক মহিলারা। গলায় লোহার চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা করছে সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫০
Share:

পাঁচ দিনের মধ্যে আবারও একই রকম হামলা। বাড়িতে চড়াও হয়ে ফের মহিলার গলায় চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল কালনায়। এ বার কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপলতি গ্রামে হামলার শিকার হলেন এক বৃদ্ধা। তবে সেই সময়েই তাঁর ছেলে বাড়িতে চলে আসায় তিনি রক্ষা পেয়েছেন বলে জানান ওই বৃদ্ধা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালনা মহকুমায় এই ধরনের ঘটনা এ নিয়ে পাঁচ বার ঘটল। দিনেরবেলা নানা অছিলায় বাড়িতে ঢুকে পড়ছে এক দুষ্কৃতী। তার নিশানা বয়স্ক মহিলারা। গলায় লোহার চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা করছে সে। ২০১৫ সালে মন্তেশ্বরে ও কালনা ২ ব্লকের ধাত্রীগ্রামে দু’জন মহিলা খুন হন এ ভাবেই। সে বছরই আনুখাল পঞ্চায়েতের কদম্বা গ্রামে বাড়িতে বিদ্যুতের মিটার দেখার নাম করে ঢুকে এক মহিলাকে একই ভাবে খুন করার চেষ্টা করে দুষ্কৃতী। কিন্তু মহিলার প্রতিরোধের মুখে সে পালিয়ে যায়।

ফের এই রকম ঘটনা ঘটে গত ২৭ জানুয়ারি। কালনা ২ ব্লকের আনুখাল গ্রামে সে দিন সকালে বাড়িতে একাই ছিলেন বছর আটচল্লিশের এক মহিলা। তাঁর স্বামী বাইরে ধান মাপার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ির মেঝেতে মহিলার দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। গলায় পেঁচানো ছিল একটি গামছা। পাশে পড়ে ছিল একটি লোহার চেন। অভিযোগ, বাড়ি থেকে কয়েক হাজার টাকা ও এক জোড়া কানের দুলও খোয়া যায়।

Advertisement

উপলতি গ্রামে শুক্রবার বাড়িতে একাই ছিলেন ৭২ বছরের লক্ষ্মী পাল। তিনি অভিযোগ করেন, মিটার দেখতে চাওয়ার নাম করে বছর পঞ্চাশের এক অপরিচিত ব্যক্তি বাড়িতে আসে। তিনি তাকে চেনেন না জানানোয় সে দাবি করে, সদ্য কাজে যোগ দিয়েছে। এর পরেই তিনি তাকে বাড়ির সিঁড়ির সামনে যেখানে মিটার রয়েছে সেখানে নিয়ে যান। আচমকা সে তাঁর গলায় চেন পেঁচিয়ে ধরে। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে মারধরও করে। এই সময়ে আচমকা তাঁর ছেলে ভক্তিপদ পাল বাড়ি ফিরে এলে তড়িঘড়ি পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি ঘটনার পরেই চেনটি ঘটনাস্থলে ফেলে যাচ্ছে দুষ্কৃতী। শুক্রবার একটি হেলমেটও ফেলে গিয়েছে। ২০১৫ সালে আনুখালের কদম্বা গ্রামের ঘটনার পরে আক্রান্ত মহিলার বিবরণ শুনে দুষ্কৃতীর একটি স্কেচ আঁকা হয়েছিল। ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। বিভিন্ন দোকানে কারা চেন কিনছে, খোঁজ রাখা হয়। অনেককে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। তবে কাউকে ধরা যায়নি। তবে তার পর থেকে বছর তিনেক এই ধরনের অপরাধ বন্ধ ছিল।

শুক্রবার থেকে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা দফায়-দফায় তদন্ত শুরু করেছেন। পুলিশ জানায়, উপলতি গ্রামে এক জন নয়, দু’জন দুষ্কৃতী এসেছিল। এক জন মোটরবাইক নিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছিল। দুষ্কৃতীদের একটি সিসিটিভি ফুটেজও তাদের হাতে এসেছে বলে দাবি পুলিশের। কী কারণে এক জন বাড়িতে ঢুকে বয়স্ক মহিলাকে খুনের চেষ্টা করছে, তার কারণ নিয়ে পুলিশ ধন্দেই। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্য়ায় বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। উপলতিতে আক্রান্ত মহিলা চিকিৎসাধীন। তিনি সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন