অন্ডালের মদনপুর পঞ্চায়েতের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসক নেই। পরিষেবা মেলে না অন্তর্বিভাগে। যাতায়াতের রাস্তাও বেহাল। অন্ডালের মদনপুরে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও তা না থাকারই সামিল, দাবি বাসিন্দাদের।
১৯৯৭ সালে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গড়ে ওঠে দান করা জমিতে। মদনপুর, পুবরা, রামপ্রসাদপুর, বাসকা, শ্রীরামপুর, কুলডাঙা, কুঠিডাঙার দশ হাজারের বেশি বাসিন্দার স্বাস্থ্য পরিষেবায় ভরসা সেটি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহাল বলে কোনও চিকিৎসক এখানে থাকতে চান না। ইসিএলের বিদ্যুতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চলে। অন্তর্বিভাগের জন্য ৮টি শয্যা থাকলেও তা কোনও দিন খোলে না। প্রথম দিকে বহির্বিভাগে তিন-চার দিন ডাক্তার বসতেন।
২০১০ সাল থেকে স্থায়ী চিকিৎসক আসা বন্ধ হয়ে যায়। চুক্তিতে এক জন চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০১১ সালে শাসকদলের কিছু নেতা-কর্মী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে চিকিৎসককে অপমান করায় তিনি তার পর থেকে আসা বন্ধ করে দেন, দাবি বাসিন্দাদের। ফলে, এখন কোনও চিকিৎসক নেই। বছর ছয়েক এ ভাবেই চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এখন আছেন এক জন করে ফার্মাসিস্ট ও নার্স এবং দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। ফার্মাসিস্টই তাঁদের ভরসা বলে জানান রোগীরা।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স স্বর্ণরেণু চট্টোপাধ্যায় জানান, গড়ে প্রতি দিন ৪০ জন করে রোগী আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু করা সম্ভব হয়। জটিল রোগ হলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা রানিগঞ্জের বেলুনিয়া প্রাথমিক হাসপাতালে। স্থানীয় বাসিন্দা হারাধন বাউরি, রাজা বাউরিরা জানান, ২০০৬ সাল পর্যন্ত অন্তর্বিভাগটি বিভিন্ন নির্বাচনের আগে তিন বার উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু শেষমেশ চালু হয়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বর, সর্দি-কাশির চিকিৎসা ছাড়া আর কিছু হয় না। বহুবার স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগে আর্জি জানালেও ফল হয়নি বলে তাঁদের দাবি।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরিতে সাড়ে সাত বিঘা জমি দিয়েছিল বাসকার গোস্বামী পরিবার। সেই পরিবারের সদস্য ইলা গোস্বামী, শ্যামসুন্দর গোস্বামী, নিতাই গোস্বমীদের কথায়, ‘‘আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার আশায় জমি দিয়েছিলাম। ঘেরা পাঁচিলের মাঝে ভবন তৈরি করে কেন্দ্র চালু করা হলেও শেষে সবই প্রহসনে পরিণত হল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দিকে তাকালে এখন দুঃখ হয়।’’
অন্ডালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) পরিতোষ সোরেন বলেন, ‘‘সম্প্রতি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। তা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’