এই বাসটিই বোমাবাজির মধ্যে পড়ে। নিজস্ব চিত্র
এক স্কুলে দুই বুথ। দুটোতেই সক্রিয় শাসক-বিরোধী।
সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় গোলমাল দেখল ভাতারের সাহেবগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের ওরগ্রাম। আদিবাসী প্রাথমিক স্কুলে দুটি বুথে (১৪১, ১৪২) একটিতে চলল সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই, অন্যটিতে লড়ল তৃণমূল-বিজেপি। চলল বোমাবাজি। মাঝে পড়ল কনেযাত্রীবোঝাই একটি বাসও।
গতবার সিপিএমের দখলে ছিল পঞ্চায়েতটি। বছর খানেক আগে সিপিএম থেকে কিছু লোকজন তৃণমূলে যোগ দেয়। পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে আসে। এ বার পঞ্চায়েতের সব আসনেই বিরোধীরা মনোনয়ন দেয়। প্রতিরোধের বার্তাও দেওয়া হয়। ভোটের দিন তারই প্রকাশ দেখা গেল।
সকাল থেকে সব দলের এজেন্টরাই বুথে ছিলেন। ভোটারদের লাইনও ছিল দীর্ঘ। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তৃণমূল, বিজেপির গোলমাল বাধে। মারধরে দু’দলের কয়েকজন জখম হন। পুলিশের হস্তক্ষেপে গোলমাল থেমে গেলেও উত্তেজনা ছিল। আবার আড়াইটে নাগাদ ঝামেলা বাধে বলে অভিযোগ। দুটি বুথেই বহু লোক জড়ো হয়। বাক্স ভেঙে ব্যালট পেপার বের করে ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আতঙ্কে ভোগেন ভোটকর্মীরাও। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম, বিজেপি, নির্দল এক হয়ে ওরগ্রামের বাঁশতলা থেকে বোমাবাজি শুরু করে। পাল্টা প্রতিরোধে নামে তৃণমূল। হাটতলার দিক থেকে বোমাবাজি শুরু হয়। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়ে। ময়দানে নামে পুলিশ। আসেন ভাতারের বিডিও, পর্যবেক্ষক। পাশের একটি পুকুর থেকে প্রচুর ছেঁড়া ব্যালট পেপার মেলে। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ জানাতে থাকেন পুলিশের কাছে। তাঁদের অভিযোগ, ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। বোমাবাজিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বয়স্কেরা। দুই বুথেই ভোট বন্ধ হয়ে যায়।
এরই মাঝে পড়ে বাসটি। ওরগ্রামের খাঁ পাড়ায় একটি বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। গলসির বাবলা গ্রাম থেকে কনের বাড়ির ৪২ জন আসানসোল রুটের একটি বাসে আসছিলেন। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে বোমাবাজির খবর পান তাঁরা। তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাসে উঠতেই রাস্তায় বোমা পড়তে থাকে। বাসের সামনের কাচে দুটি বোমা এসে পড়ে। কাচটি ভেঙে যায়। বাসের চালক ও খালাসি আহত হন। মুখে, হাতে কাচের টুকরো গেঁথে যায়। ওই অবস্থাতেই গলসি রওনা দেন তারা।