কালেখাঁতলা ১ ব্লকে তৃণমূলের উল্লাস। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
বিরোধী-শাসক সব আছে। ভোটের লড়াই ছিল প্রথম থেকেয়। কিন্তু অভিযোগ নেই। শাসকের বিরুদ্ধে বিরোধীর বা বিরোধীর বিরুদ্ধে শাসকের।
ভোটপর্বের গোড়া থেকেই যেখানে রাজ্য জুড়ে টানা মারধর, হুমকির অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা, সেখানে কালনা ২ ব্লকের পিন্ডিরা অন্যরকম। মনোনয়ন তো বটেই, ভোটের দিনেও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। গ্রামের মানুষ বলছেন, ‘‘ভোট তো এমনটাই হওয়া উচিত।’’
তৃণমূলের দখলে থাকা পিন্ডিরায় বৃহস্পতিবার ফল বেরনোর পরে দেখা গেল, পঞ্চায়েতের ১৫টা আসনেই জিতেছে তৃণমূল। ভোট পেয়েছে ৭৭৮০। ৪৮৮২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা কৌশিক দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘কর্মীরা কাঁধে কাঁধে দিয়ে লড়েছেন গোড়া থেকে। আজ গণনাকেন্দ্র থেকে বের না করে দিলে পিন্ডিরা, বোয়ালিয়া, রামেশ্বরপুর, ইছাপুরে, কাশীপুরে আমরা আরও ভাল ফল করতাম।’’
ভোটের আগে এই পঞ্চায়েতে ৯টা পথসভা করেছে বিজেপি। বড় মিছিল করেছে। সিপিএম প্রার্থীরাও তেমন কোনও অভিযোগ করেননি। তৃণমূল নেতাদের দাবি, ভোটে যে মানুষের রায়ই চূড়ান্ত এটা তারই প্রমাণ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা রথীন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সব আসনেই বিরোধীরা প্রার্থী দিয়েছিলেন। ভোট নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ ছিল না। ফলে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ আমাদের উন্নয়নকে চেয়েছেন।’’
যদিও ৪২৯ ভোট পাওয়া সিপিএমের দাবি, তাঁরা মনোনয়ন দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সব সমীকরণ এত সহজ নয়। সিপিএম নেতা আবু বককর হালদার বলেন, ‘‘প্রথম দিকে সব ঠিকই ছিল। কিন্তু পরের দিকে জোর খাটিয়েছে শাসক দল।’’ যদিও মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে ভোট দিতে পারেননি বা বুথে গিয়ে ফিরে এসেছেন এমন কথা বলছেন না তাঁরাও।
এ দিন গ্রামে গিয়েও দেখা যায়, ছবিটা আর পাঁচটা দিনের মতোই। জয়ের উচ্ছ্বাস আছে, হেরে যাওয়ার মন খারাপও আছে, কিন্তু কোনওটাই মাত্র ছাড়ায়নি। গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ভোট মানেই হিংসার ছবি ফুটে ওঠে। কিন্তু এটা তো গণতন্ত্রের উৎসব। সোজা পথে জয় আসাই তো কাম্য।’’ তাঁর দাবি, যদি এমনিই জেতা যায়, তাহলে ছাপ্পা, ব্যালট বাক্স পোড়ানোর, খুন-জখমের দরকার কী?