নববর্ষের প্রথম দিনে এক পক্ষ নেমে পড়ল শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে জনসংযোগ করতে। অন্য পক্ষ তখন আজ, সোমবার আদালত কী রায় দেয়, সে দিকে তাকিয়ে।
রবিবার, বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিনটি জনসংযোগের কাজে লাগালেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা। এ দিন সকাল থেকে সালানপুর, বারাবনি এলাকায় তৃণমূলের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা যায়। তৃণমূলের সালানপুর ব্লক সভাপতি তথা এ বারের জেলা পরিষদ প্রার্থী মহম্মদ আরমান বলেন, ‘‘এ দিন ভোট চাওয়া বা কোনও রাজনৈতিক কথাবার্তা বলা হয়নি মানুষের সঙ্গে। স্রেফ শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্যই পথে নামা হয়েছে।’’
বিরোধীদের অবশ্য এ দিন পথে নামতে দেখা যায়নি। সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা এখন আদালতের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। তার পরে রাস্তায় নামব।’’ আসানসোলের বিজেপি নেতা তাপস রায় বলেন, ‘‘মানুষজনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তবে ভোটের প্রচার শুরু হবে কোর্টের নির্দেশ জানার পরে।’’
দুর্গাপুরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘গত বছর দুর্গাপুরের পুরভোটে আদালত পুলিশ-প্রশাসনকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। এ বারও কোর্ট যা নির্দেশ দেবে, তা প্রশাসন কতটা মানবে সে নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’ তবে তাঁর দাবি, আদালত মনোনয়নের জন্য আরও কিছু দিন বরাদ্দ করলে কয়েকটি আসনে ফের প্রার্থী দেওয়ার ভাবনা রয়েছে তাঁদের। দুর্গাপুরের বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘যদি মনোনয়নের দিন বাড়ানো হয় তবে আরও কিছু আসনে প্রার্থী দিতে পারব বলে আশা করছি।’’
সালানপুর ব্লকে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল তিনটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার পরিস্থিতিতে রয়েছে। তবে বাকি আটটি পঞ্চায়েতের মোট ৬০টি আসনের মধ্যে বিরোধীরা ৫৫টিতে প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ২৩টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে বিরোধী প্রার্থী রয়েছে। গত বার এই এলাকায় জেলা পরিষদের দু’টি আসনই জিতেছিল সিপিএম। এ বার দু’টিতেই প্রার্থী দিয়েছে তারা। স্থানীয় সিপিএম এবং বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, এ বার যে ক’টি আসনে তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তা শাসকদলের হুমকির জন্য। মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও অশান্তিতে পড়তে হয়েছে। আদালত মনোনয়নের দিন বাড়ালে বাকি আসনগুলিতেও প্রার্থী দেওয়ার আশায় রয়েছেন তাঁরা। সালানপুরে দলের তরফে ভোটের দায়িত্বে থাকা সিপিএম নেতা বংশগোপালবাবুর বক্তব্য, ‘‘মনোনয়ন জমার সময়সীমা আদালত বাড়িয়ে দিলে আমরা পঞ্চায়েতের বাকি আসনে প্রার্থী দেব।’’
সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা শ্যামল মজুমদারের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই বিরোধীরা এত আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে।’’