কালনার বেগপুর পঞ্চায়েত। —নিজস্ব চিত্র।
তহবিলে পড়ে বহু লক্ষ টাকা। অথচ, কাজ হচ্ছে না। কালনা ১ ব্লকের বেগপুর পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, নির্মাণ সহায়ক কাজ না করায় ৮১ লক্ষ টাকা এখনও খরচ করা যায়নি। এর বড় অংশ চলতি মাসের মধ্যে খরচ করতে না পারলে পরের বছর বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হতে পারে পঞ্চায়েতটি। নির্মাণ সহায়ক যদিও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ মানতে চাননি।
একশো দিনের কাজ-সহ কয়েকটি সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে কালনা মহকুমায় এগিয়ে থাকা পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে একটি বেগপুর। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় মাস চারেক আগে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, সেই সময়ে নির্মাণ সহায়ক হিসেবে নিয়োগ করা হয় আতাউর রহমান নামে এক কর্মীকে। পঞ্চায়েত প্রথমে তাঁর কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি তোলে। তিনি আগে যে পঞ্চায়েতে কাজ করেছেন সেখানে ভাল কাজ হয়নি বলে দাবি করেন পঞ্চায়েতের কর্তারা। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে শেষে পঞ্চায়েত তাঁকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আতাউর নির্মাণ সহায়ক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা প্রকল্পের গতি থমকে যায়। চলতি বছরে ১৪ ফিনান্স কমিশন এবং আইএসজিপি প্রকল্পে পঞ্চায়েত পেয়েছিল ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে এখনও পড়ে রয়েছে ৮১ লক্ষ টাকা। যে ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তা ওই নির্মাণ সহায়ক কাজে যোগ দেওয়ার আগে। সৌরবিদ্যুৎ, চাষের যন্ত্রাংশ, দুধের ক্যান বিলি-সহ নানা কাজে সেই টাকা খরচ করা হয়েছিল।
সম্প্রতি সদস্যদের নিয়ে পঞ্চায়েত ভবনে বৈঠক করে বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে রেজোলিউশন করে উল্লেখ করা হয়, নির্মাণ সহায়কের জন্য পঞ্চায়েতের কাজকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পঞ্চায়েতের প্রাপ্ত টাকার ৬০ শতাংশ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে খরচ করতে না পারলে আগামী বছর আইএসজিপি তহবিলের বরাদ্দ মিলবে না। ওই রেজোলিউশনটির কপি পাঠানো হয় প্রশাসনের নানা স্তরের আধিকারিকদের। বেগপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শিউলি মল্লিক বলেন, ‘‘উপপ্রধান নির্মাণ সহায়ককে কাজের গতি বাড়ানোর পরামর্শ দিতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। পঞ্চায়েত টাকা খরচ করতে না পারলে মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।’’
কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, নির্মাণ সহায়কের ক্ষমতা অন্য কাউকে দেওয়া যায় কি না দেখা হচ্ছে। ওই পঞ্চায়েতে নির্মাণ সহায়ক বদলেরও চেষ্টা হচ্ছে। নির্মাণ সহায়ক আতাউরের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘সপ্তাহ দুয়েক ছুটিতে ছিলাম। মঙ্গলবার কাজে যোগ দিয়েছি। জানি না কেন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠছে। খোঁজ নিচ্ছি।’’