প্রতীকী ছবি।
গ্রীষ্মকালীন রক্ত-সঙ্কট মেটাতে সম্প্রতি পুলিশ-প্রশাসনকে শিবির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে ‘দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম’ও। কেউ ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে, কেউ বা বাবা-মায়ের স্মৃতিতে রক্তদান করলেন। তা দেখে উদ্যোক্তাদের আশা, এমনটা চলতে থাকলে সহজেই রক্ত-সঙ্কট মেটানো সম্ভব হবে।
এই সংগঠনটি ধারাবাহিক ভাবে নানা এলাকায় শিবির আয়োজন করে। ১৪ মে গোপালপুরের একটি আবাসনে, তার পরে এ দিন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনে শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। শিবির আয়োজনের পাশাপাশি রক্ত দানে আগ্রহ বাড়াতে সোশ্যাল মিডিয়াতে বাসিন্দাদের আহ্বানও জানানো হয়েছিল।
উদ্যোক্তারা জানান, আহ্বানে এ ভাবে সাড়া মিলবে তা ভাবা যায়নি। কী রকম? এ দিন বেসরকারি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া অরিজিৎকে নিয়ে শিবিরে এসেছিলেন একটি বেসরকারি গ্রাফাইট কারখানার কর্মী চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী বর্ণালী। তাঁরা জানান, ছেলের জন্মদিন। তাই দু’জনেই রক্তদান করে দিনটি উদ্যাপন করতে চান। এমন অভিনব উদ্যাপন কেন? চঞ্চলবাবু বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা যদি এগিয়ে আসেন, তা হলে রক্তের আকাল কোনও দিনই হবে না।’’ বর্ণালীদেবী অবশ্য বলেন, ‘‘এক আত্মীয় পুড়ে গিয়েছিলেন। তখন দেখেছিলাম, বিপদে রক্তের চাহিদা কী রকম। তাই ভাবলাম, ছেলের জন্মদিনে একটা ভাল কাজ করা যাক।’’
শিবিরে এসেছিলেন দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবী আয়ুব আনসারি, তাঁর স্ত্রী রেহেনা খাতুন ও তাঁদের ছেলে রওসন জামির আনসারি। তিন জনেই রক্তদান করেছেন। আয়ুব জানান, ১৯৮৭ সালে এই দিনে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। মা নিখোঁজ ২০০৩ সাল থেকে। দু’জনের স্মৃতিকে সম্মান জানাতেই তাঁরা সপরিবারে শিবিরে এসেছিলেন বলে জানান রেহেনা।
উদ্যোক্তারা জানান, এ দিন মোট ১০ জন রক্তদান করেছেন। বাসিন্দাদের এমন কারণে রক্তদান দেখে উচ্ছ্বসিত উদ্যোক্তারাও। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কবি ঘোষ বলেন, ‘‘এ ভাবে সকলে এগিয়ে এলে রক্তের অভাব মিটে যাবে।’’