নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই মাইথনে নৌকাবিহার। নিজস্ব চিত্র।
লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকাভ্রমণ নিষিদ্ধ, পর্যটন কেন্দ্রগুলির জন্য নিয়ম চালু করেছে প্রশাসন। কিন্তু শিল্পাঞ্চলে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রায় মানাই হচ্ছে না। ফলে, মাইথন-সহ নানা পর্যটন কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে নৌকাবিহার। সম্প্রতি এমনই ছবি দেখা গিয়েছে সর্বত্র। আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী জানান, নজরদারি চালিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।
শীতের মরশুমে মাইথন-সহ শিল্পাঞ্চলের ভ্রমণ কেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে। নৌকাবিহারই অন্যতম আকর্ষণ এই সব জায়গায়। মহকুমা প্রশাসন দুর্ঘটনা এড়াতে নৌকাবিহারের সময়ে লাইফ জ্যাকেট পরার নিয়ম চালু করেছে। সে ব্যাপারে লিখিত বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি মাইথনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকেরা সেই জ্যাকেট না পরেই জলাধারে নৌকায় চড়ে ঘুরছেন। স্পিডবোটের যাত্রীরা লাইফ জ্যাকেট পড়লেও সাধারণ নৌকায় এ সবের কোনও বালাই নেই। মাইথন জলাধার লাগোয়া সিদাবাড়ি, বাথানবাড়িতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে।
পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হচ্ছে না কেন? ‘মাইথন বোটম্যান ট্রান্সপোর্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি’র সম্পাদক রহমত আলি দাবি করেন, ‘‘আমাদের পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট নেই। তাই দেওয়া যাচ্ছে না।’’ প্রশাসনের তরফে আগামা জানানো হলেও পর্যটন মরসুম শুরুর আগে কেন পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়নি, তার উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন নৌকাচালকেরা। তবে জেটির এক পাশে দেখা গিয়েছে, ডাঁই করে ফেলে রাখা হয়েছে লাইফ জ্যাকেট। অন্য দিকে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছে নৌকায়। বার্নপুরের একটি পার্কেও দেখা গিয়েছে পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট না পরিয়ে নৌকায় তোলা হচ্ছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য সতর্ক হবেন বলে দাবি করেছেন।
মাইথন-সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, নৌকাবিহারের জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে বেশ চড়া দরই হাঁকেন নৌকাচালকেরা। ১৫-২০ মিনিটের নৌকাবিহারের জন্য প্রতি পর্যটক পিছু খরচ পড়ে একশো টাকা। তার পরেও পর্যটকদের সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া হয় না। সালানপুরের বিডিও তপন সরকার বলেন, ‘‘নৌকাচালকদের অনুরোধ করা হয়েছিল, লাইফ জ্যাকেটের অভাব থাকলে হাতে তৈরি জ্যাকেট বানিয়ে পর্যটকদের পরাতে হবে। তাঁদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। তবু কেন নির্দেশ মানা হচ্ছে না, তা আমরা দেখছি।’’ বিডিও জানান, পর্যটকেরা লাইফ জ্যাকেট না পরতে চাইলে তাঁদের নৌকায় তুলতে নিষেধ করা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
শুধু মাইথন নয়, আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রে অবিলম্বে এ বিষয়ে কড়া নজড়দারি করা হবে বলে আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী।