স্ট্যান্ডে বসছে বাজার, বাসস্টপ ভরা আগাছায়

শহরের সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা হয়েছে নানা রকমের। পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও নানা কর্মসূচি হয়েছে। নাগরিক পরিষেবা উন্নত করার ব্যাপারে নানা প্রতিশ্রুতি মিলেছে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৬:২৫
Share:

দখল হয়ে গিয়েছে যাত্রী-ছাউনি। নিজস্ব চিত্র।

শহরের সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা হয়েছে নানা রকমের। পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও নানা কর্মসূচি হয়েছে। নাগরিক পরিষেবা উন্নত করার ব্যাপারে নানা প্রতিশ্রুতি মিলেছে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু আসানসোল পুরসভা এলাকার বহু পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সংস্কারে নজর নেই কোনও পক্ষের, অভিযোগ যাত্রীদের। বহু বার নানা পক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েও ফল হয়নি বলে দাবি তাঁদের। ফলে, নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির যদিও আশ্বাস, প্রান্তিক দুই স্ট্যান্ড-সহ নানা বাসস্টপ সংস্কারের পরিকল্পনা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

Advertisement

আসানসোলের সিটি বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও পুর এলাকায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বরাকর ও রানিগঞ্জ। আশপাশের এলাকা ছাড়াও ভিন্‌ জেলা, এমনকী অন্য রাজ্যের বাসও দাঁড়ায় এখানে। বরাকর বাসস্ট্যান্ডের বেহাল অবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, কয়েকটি মিনিবাস ছাড়া অন্য কোনও বাস স্ট্যান্ডে ঢুকতে পারে না। মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে পথচারী ও অন্য সব গাড়ির সমস্যা তৈরি করে।। এলাকায় প্রবল যানজট হয়। স্ট্যান্ডের দখল নিয়েছে সব্জি ও মাছের বাজার।

যাত্রীদের অভিযোগ, বরাকর বাসস্ট্যান্ডে যেটুকু অংশে বাস দাঁড়াতে পারে, সেখানে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা বলতে কিছু নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ছাউনি নেই। স্থানীয় বাসিন্দা তথা বরাকর বণিকসভার সভাপতি দীপক দুধানি বলেন, ‘‘আমরা অনেক বার এই স্ট্যান্ডের হাল ফেরানোর দাবি তুলেছি। কেউ শোনেননি।’’ অনেকটা এমনই পরিস্থিতি রানিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডেরও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্ট্যান্ড অত্যন্ত অপরিসর, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, উপযুক্ত ছাউনিও নেই। সম্প্রতি আসানসোল, বরাকর ও রানিগঞ্জের বাসস্ট্যান্ডর উন্নয়নের আর্জি জানিয়েছে বাসস্ট্যান্ড উন্নয়ন কমিটি। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির পরামর্শে ওই কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টপাধ্যায়।

Advertisement

শুধু এই স্ট্যান্ডগুলি নয়, খারাপ অবস্থা এলাকার নানা বাসস্টপেরও। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আগাছার জঙ্গল, আলো না থাকার সমস্যা প্রায় সর্বত্র। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সমাজবিরোধীরা অনেক বাসস্টপের আশপাশে আসর বসায় বলে অভিযোগ। অনেক জায়গায় পাকা ছাউনির ছাদ ধসে গিয়েছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে মনে করে তার তলায় দাঁড়ানোর ঝুঁকি নেন না যাত্রীরা। বেশ কয়েকটি বাসস্টপের দখল নিয়েছেন ভবঘুরে অথবা কোনও স্থায়ী-অস্থায়ী দোকানের মালিক। এমন একটি দোকানের মালিক পরমেশ্বর সাউয়ের বক্তব্য, ‘‘কেউ দাঁড়ায় না এখানে। তাই দোকান করেছি।’’ এলাকার এক শাসক দলের নেতা পাশে রয়েছেন জানিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘এখানে ব্যবসা করতে সমস্যা নেই।’’

মেয়র জিতেন্দ্রবাবু জানান, বরাকর ও রানিগঞ্জে দুই বাসস্ট্যান্ডের আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, যাত্রীদের সুবিধের জন্য বরাকর থেকে রানিগঞ্জ পর্যন্ত ২৬টি আধুনিক যাত্রী-ছাউনি তৈরি করা হবে। সে জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৯১ লক্ষ টাকা। রাহা লেনের কাছে তুলনায় বড় ও ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এমন একটি বাসস্টপ গড়া হবে। তার খরচ ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা করে খরচ হবে এমন ১৩টি ছাউনি তৈরি করা হবে। ১২টি ছাউনি গড়া হবে যেগুলির খরচ ধার্য হয়েছে প্রায় সওয়া তিন লক্ষ টাকা করে। মেয়র জানান, শীঘ্রই এই সব নির্মাণের জন্য দরপত্র ডাকা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন