শহরে খাটাল, দূষণ রুখতে বায়ো-প্ল্যান্ট

খাটালের জেরে শহরে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া-সহ নানা মশাবাহিত রোগ ছ়ড়ানোর আশঙ্কা অতীতে একাধিক বার জানিয়েছেন শহরবাসী। পুরসভার কাছে শহর থেকে খাটাল উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে বহু বার স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৩
Share:

নিয়ামতপুর নিউ রোডের ধারে খাটাল। নিজস্ব চিত্র

বসতি এলাকায় খাটাল। প্রায়ই রাস্তায় চলে আসে গরু, মোষ। সেই সঙ্গে বাড়ে মশার উপদ্রব, দূষণও। দীর্ঘ দিন ধরে এমনই অভিযোগ আসানসোল পুরসভার নানা এলাকার বাসিন্দাদের। খাটালের দূষণ রোধ ও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ রুখতে সাফাইয়ে জোর দিয়ে শহর জুড়ে একাধিক ‘বায়ো কম্পোজিট প্ল্যান্ট’ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে আসানসোল পুরসভা। তবে খাটাল থাকছে শহরেই।

Advertisement

খাটালের জেরে শহরে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া-সহ নানা মশাবাহিত রোগ ছ়ড়ানোর আশঙ্কা অতীতে একাধিক বার জানিয়েছেন শহরবাসী। পুরসভার কাছে শহর থেকে খাটাল উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে বহু বার স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। একসময়ে, শহর থেকে খাটাল সরাতে শহরের বাইরে তা স্থানান্তর করার কথা জানায় পুরসভা। কিন্তু দীর্ঘকাল কেটে গেলেও তা হয়নি। পুরসভার কর্তাদের একাংশ জানান, এ ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দমি।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, মাঝেসাঝে খাটালের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও খাটাল ব্যবসা নির্মূল করা যাচ্ছে না। শহরবাসীর একাংশ খাটালের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেও, অনেকেই আবার খাটাল ব্যবসা পুরোপুরি তুলে না দিয়ে দূষণ রোধের বিকল্প ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, হাতের কাছে খাটাল থাকলে সহজেই দুধের জোগান পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আবার প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের যুক্তি, খাটাল ব্যবসা বন্ধে করে সেই ব্যবসায় যুক্ত মানুষজনকে রাতারাতি কর্মহীন করা ঠিক নয়। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার আধিকারিকদের দু’দিক সামলে কোনও পদক্ষেপ করা যায় কি না, সে বিষয়ে মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি পরামর্শ দিয়েছিলেন।

Advertisement

সম্প্রতি অতিরিক্ত জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) তথা পুরসভার কমিশনার খুরশিদ আলি কাদরির উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন পুরসভার আধিকারিকেরা। সেখানেই ঠিক হয়েছে, আসানসোল শহর-সহ বিভিন্ন খাটাল লাগোয়া এলাকাগুলি চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ছোট আকারে ‘বায়ো কম্পোজিট প্ল্যান্ট’ বসানো হবে। খাটালের আবর্জনা ও গরু-মোষের গোবর সেই প্ল্যান্টে আনা হবে। প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তা থেকে সার হবে। ফলে খাটাল শহরে থাকলেও দূষণের সমস্যা আর থাকবে না, আশা পুরসভার কর্তাদের।

খাটালের বর্জ্য ও গোবর প্ল্যান্টে আনার জন্য খাটাল মালিকদের কাছ থাকে ভাড়া নেওয়া হবে। আবার সার বাজারে বিক্রি করেও আয় হবে। পুরসভার কমিশনার বলেন, ‘‘এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।’’ চিফ ইঞ্জিনিয়ার (আসানসোল) সুকোমল মণ্ডল জানান, প্রকল্পের খরচ ও কার্যকারিতা জানতে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement