বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নাকচ, তবুও কাটল না এএসপি নিয়ে সংশয়

স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (‌সেল) নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, ২০১৮-র ১৪ ফেব্রুয়ারি এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য যে ‘আগ্রহপত্র’ চাওয়া হয়েছিল, তা নাকচ করা হয়েছে।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১২
Share:

শুক্রবার বিকেলে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট থেকে বেরিয়ে আসছেন শ্রমিকেরা। ছবি: বিকাশ মশান

শ্রমিকদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি) কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। অবশেষে তা নাকচ করার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তার পরেও কারখানার ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে সংশয় থাকল, মনে করছেন শ্রমিক নেতৃত্বের একাংশ। তবে কেউ কেউ খানিক আশাবাদীও।

Advertisement

স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (‌সেল) নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, ২০১৮-র ১৪ ফেব্রুয়ারি এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য যে ‘আগ্রহপত্র’ চাওয়া হয়েছিল, তা নাকচ করা হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশিকাও তেমন খুশির খবর নয় বলে জানাচ্ছেন শ্রমিক নেতৃত্ব।

কেন এমন মনে হওয়া? সিটুর দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে আসানসোলের হিন্দুস্তান কেব্‌লস ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু তার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। ফের লোকসভা ভোটের সামনে হওয়া এই ঘোষণা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান সিটু নেতৃত্ব। দুর্গাপুরের সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘শ্রমিক সংগঠনগুলির লাগাতার আন্দোলনের চাপে কেন্দ্রীয় সরকার আপাতত এই ঘোষণার কথা জানিয়েছে। আমাদের আন্দোলনের জন্য বাইরের কেউ কারখানায় ঢুকতে পারেননি। তাই কোনও সংস্থা আগ্রহপত্র জমা দেয়নি।’’ সিটুর আরও দাবি, গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও নীতি আয়োগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে ৯০ হাজার কোটি টাকা জোগাড় করা হবে। নির্দিষ্ট করা ৩৫টি কারখানার মধ্যে দুর্গাপুরের এএসপি-ও রয়েছে। ওই বৈঠকের আট দিনের মাথায়, বৃহস্পতিবার এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণ নাকচের সিদ্ধান্ত বিশ্বাসযোগ্য কতখানি, তা নিয়ে সন্দিহান সিটু নেতৃত্ব।

Advertisement

আইএনটিইউসি জেলা নেতা বিকাশ ঘটক অবশ্য বলেন, ‘‘যদি সত্যিই কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল হয় তাহলেও আন্দোলন যেমন চলছে তেমনই চলবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য, ডিএসপি-র সঙ্গে এএসপি-র সংযুক্তি। কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব আমরা দিয়েওছি।’’ তিনি জানান, এর ফলে সেলের দু’টি কারখানাই লাভবান হবে। ডিএসপি-র আধুনিকীরণের জন্য অতিরিক্ত যে জায়গা লাগবে, তা এএসপি-তে রয়েছে। দু’টি কারখানার সংযুক্তি ঘটলে কাঁচামাল হিসাবে ‘হট মেটাল’, ‘কোকআভেন গ্যাস’ প্রভৃতি উপাদান ডিএসপি থেকে পাবে এএসপি। ফলে উৎপাদন খরচ কমবে।

কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা সম্পর্কে সংশয়ে আইএনটিটিইউসি-ও। বাকি শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে আন্দোলন না করে বরাবর আলাদা কর্মসূচি নিয়েছে আইএনটিটিইউসি। সংগঠনের এএসপি-র নেতা অশোক কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে, এ কথা স্পষ্ট ভাবে ইস্পাতমন্ত্রী জানান।’’

এই পরিস্থিতিতে সিটু, আইএনটিইউসি, কেউই আন্দোলন থামবে না বলে জানিয়েছে। বরাবরের মতো পৃথক ভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আইএনটিটিইউসি-ও।

তবে এই ঘোষণা সম্পর্কে দুর্গাপুরের বিএমএস নেতা অরূপ রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশদে খোঁজ নিচ্ছি। আমরা প্রথমে ডিএসপি-র আধুনিকীকরণ ও তারপরে এএসপি-র সঙ্গে সংযুক্তিকরণের পক্ষে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন