Pradhan Mantri Awas Yojana

পরিদর্শনের খবর আগেই পৌঁছচ্ছে কেন, ক্ষোভ

হরিপুরে কখনও খোশমেজাজে কখনও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের কাছে ক্ষোভ জানাতে দেখা যায় তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বুদবুদ, গলসি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০১
Share:

বাঁ দিকে, গলসিতে তদন্তে কেন্দ্রীয় দল। ডান দিকে, গলিগ্রামের কাছে চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

তাঁদের আসার খবর উপভোক্তাদের কাছে আগেই পৌঁছে যাচ্ছে জেনে ক্ষোভ জানালেন আবাস প্রকল্পের তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান দল। পরিদর্শনের দ্বিতীয় দিনে, বৃহস্পতিবার গলসি ১ ব্লকের বুদবুদ পঞ্চায়েতের ভীড়সিন গ্রাম, উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েতের হরিপুর গ্রামে ঘোরেন ওই দলের দুই সদস্য। ছিলেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাও। উপভোক্তাদের নাম কেন বাদ গিয়েছে, কার দোতলা বাড়ি রয়েছে, পেশায় দিনমজুর হলে কত রোজগার, রান্নার গ্যাস আছে কি না, সবই খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ছবি, ভিডিয়ো রেকর্ডিংও করা হয়। বিকেল পর্যন্ত পরিদর্শন শেষে ওই দলের এক সদস্য প্রদ্যুম্নকুমার কর বলেন, ‘‘যা যা দেখার নির্দেশ রয়েছে, দেখা হল। পরে আরও যাচাই করা হবে।’’

Advertisement

এ দিন বর্ধমান সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে ১১টা নাগাদ গলসি ১ কার্যালয়ে যান তাঁরা। বিডিও-র সঙ্গে কথাবার্তা বলার পরে সওয়া ১২টা নাগাদ বুদবুদ পঞ্চায়েতের ভীড়সিন গ্রামে আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্বের তালিকা থেকে বাদ যাওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি, যাঁরা বাড়ি পেয়েছেন সেরকম কয়েকজন উপভোক্তাদের বাড়িতে যান। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কৌশিক রায়, বিডিও দেবলীনা দাস। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই প্রতিনিধি একটি তালিকা নিয়ে এসেছিলেন। সেটি অনুযায়ী কয়েকটি বাড়িতে ঘোরেন। প্রথমেই ভীড়সিন গ্রামের সুভাষ সিংহের বাড়িতে যান তাঁরা। আধ ঘণ্টা কথাবার্তা হয়। পরে সুভাষ জানান, তিনি রা‌ষ্ট্রপতির কাছে কেন্দ্রীয় নানা প্রকল্পের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই কারণেই এসেছিলেন ওই প্রতিনিধিরা। অ্যাসবেস্টসের চাল দেওয়া বাড়ি থাকার পরেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান তিনি। প্রতিনিধিরা তাঁকে বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানাতে বলেন। ভবিষ্যতে বাড়ি পাওয়ার আশ্বাসও দেন।

আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়া মৃণাল কোঙারের বাড়িতেও যান তাঁরা। তাঁর মা ছায়া কোঙারকে কিছু প্রশ্ন করেন তাঁরা। বাড়ি তৈরি করা হলেও কত টাকা পেয়েছেন, তা বলতে পারেননি তিনি। বিনয় বাগদি নামে এক জনের মাটির বাড়ির ছবি তুলে, তাঁর পরিচয়পত্র দেখতে চান প্রতিনিধিরা। তারপরে ব্লক অফিসে ফিরে মধ্যহ্নভোজের পরে রওনা দেন উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েতের দিকে। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রতিনিধি দল বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে দেখলেন। আমরা সব রকমের সহযোগিতা করছি।’’

Advertisement

হরিপুরে কখনও খোশমেজাজে কখনও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের কাছে ক্ষোভ জানাতে দেখা যায় তাঁদের। ক্ষুদিরাম বাগদি নামে একজনের বাড়িতে গিয়ে খেতমজুরি করে কত রোজগার হয়, মাসে কত দিন কাজ পান, জানতে চাওয়া হয়। এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা আপনার বাড়িতে আসছি জানতে পারলেন কী করে?’’ পঞ্চায়েত সদস্যরা কাছে জেনেছেন জানার পরেই ক্ষোভ জানান ওই সদস্যেরা। সব আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেন। দোতলা বাড়ি থাকায় তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া একজনের বাড়িতে যান। কার কাছে আবেদন করেছিলেন, জানতে চান এক উপভোক্তার কাছে। বেশ কয়েকজনের বাড়িতে টিভির অ্যান্টেনা, গ্যাসের সিলিন্ডার দেখে ছবিও তোলেন। তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে ওই দলের কাছে অভিযোগও করেন কয়েকজন। তবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন