Coronavirus

করোনা-আক্রান্তের সংখ্যায় ‘সেঞ্চুরি’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধশতক থেকে শতকে পৌঁছতে সময় লাগল ঠিক এক সপ্তাহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৭:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

অর্ধশতকে পৌঁছতে সময় লেগেছিল এক মাসেরও বেশি। কিন্তু তার পরে তিন দিনেই পৌঁছে গিয়েছিল ৯২-তে। মঙ্গলবার সকালে এক সঙ্গে চার জনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসার পরেই পূর্ব বর্ধমানে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ঢুকে পড়ল তিন অঙ্কে। বিকেলে আর এক দফা রিপোর্টে আরও পাঁচ জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে, এ দিন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ১০৭-এ।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধশতক থেকে শতকে পৌঁছতে সময় লাগল ঠিক এক সপ্তাহ। প্রচুর সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলায় ফেরাই এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁরা জানান, ট্রেন, বাস-সহ বিভিন্ন উপায়ে ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়া মানুষজন মে মাসের শেষ দিক থেকে এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। নমুনা সংগ্রহও বাড়িয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পরীক্ষা বাড়ানোর জন্যে কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও তিনটি যন্ত্রে পরীক্ষা শুরু করা হয়। কাঁকসার বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতেও লালারসের নমুনা পাঠানো হতে থাকে। এ সবের ফলেই করোনা আক্রান্ত বেশি ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্য-কর্তারা মনে করছেন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে জেলায় প্রথম করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মেলে। এক মাস পার করে, ২৮ মে জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৬ জন। গত বৃহস্পতিবার ১৪ জন, শুক্রবার চার জন ও শনিবার ১৮ জনের রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসায় সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৯২। মাঝে দু’দিনে মোট ছ’জনের রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছিল।

Advertisement

গত তিন দিনে আক্রান্তের সংখ্যা কমল কী উপায়ে? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১,১০০-১,২০০ নমুনা সংগ্রহ হচ্ছিল। পরীক্ষা হয়েছে তিনটি জায়গা মিলিয়ে প্রায় ৯০০ নমুনা। তা সত্ত্বেও এক সময়ে পাঁচ হাজার নমুনা জমে গিয়েছিল। সেই ‘ব্যাকলগ’ কাটাতে সম্প্রতি গড়ে তিনশোর বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল না। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে দু’দিন নমুনা পাঠানো হয়নি। এখনও তুলনামূলক ভাবে কম নমুনা পাঠানো হচ্ছে। তাই আক্রান্তও কম আসছে।’’ মঙ্গলবার ‘সেঞ্চুরি’ হতেই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পূর্ব বর্ধমান রাজ্যে প্রথম দশ জেলার মধ্যে এসে পড়ল।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ১০৭ জন আক্রান্তের মধ্যে অন্তত ৯২ জন পরিযায়ী শ্রমিক। মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে জেলায় প্রায় তিরিশ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এসেছেন। তার পরেই আক্রান্তের সংখ্যা হু-হু করে বেড়েছে। সে কথা মেনে নিয়ে জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকেরা আসতেই করোনা-সংক্রমণ বেড়েছে। আমরা যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে রয়েছে। উদ্বেগের কারণ নেই।’’

স্বাস্থ্য দফতর জানায়, মঙ্গলবার কাঁকসার বেসরকারি ‘কোভিড’ হাসপাতাল থেকে ১৪ জন ছাড়া পেয়েছেন। এ দিনই নতুন করে ছ’টি জায়গা ‘গণ্ডিবদ্ধ’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকা দাঁড়াল ৮৩।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন