রবিবারেও ক্লাস চলছে স্কুলে

ছুটির দিন। কিন্তু রবিবার এই স্কুলে গেলে দেখা যাবে, ক্লাস চলছে। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের জন্য এ ভাবেই পড়াশোনার আয়োজন করেছে ভাতারের মাহাতা উচ্চ বিদ্যালয়।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

ভাতার শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ১০:১৫
Share:

ক্লাসে: ছুটির দিনেও পড়াশোনা। মাহাতা উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

ছুটির দিন। কিন্তু রবিবার এই স্কুলে গেলে দেখা যাবে, ক্লাস চলছে। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের জন্য এ ভাবেই পড়াশোনার আয়োজন করেছে ভাতারের মাহাতা উচ্চ বিদ্যালয়।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ মাস ধরে রবিবার এ ভাবেই ‘স্পেশ্যাল রিমেডিয়াল ক্লাস’ নিচ্ছেন আট জন করে শিক্ষক-শিক্ষিকা। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সরকারি স্তরে এই ধরনের ক্লাস আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তা নবম-দশম শ্রেণির জন্য। প্রধান শিক্ষক অজয়কুমার দত্ত জানান, “কিছু পড়ুয়ারা নিজের নামটাও ঠিক মতো লিখতে পারছে না। বোর্ডের পরীক্ষার আগেভাগেই একেবারে গোড়া থেকে যাতে তারা ঠিক মতো প্রস্তুত হতে পারে, তার জন্য আমরা এই ধরনের ক্লাসের আয়োজন করেছি।’’

রবিবার স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, পড়ুয়ারাও এমন ক্লাসে এসে সমান উৎসাহী। এক পড়ুয়া যেমন ক্লাস চলাকালীনই শিক্ষকের কাছে জানতে চাইল, ‘স্যার অঙ্কটা বুঝতে পারলাম না।’ মুহূর্তের মধ্যে তা প্রায় হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক। শিক্ষকেরা জানালেন, রবিবারের এই বিশেষ ক্লাসে ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছে প্রায় ছ’শো পড়ুয়া। স্কুলের মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ১৩০০।

Advertisement

এমন ক্লাসের ফলে পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে জড়তা যে কাটছে, তা বোঝা যায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মাহাতা গ্রামের সোনালী বাদ্যকরের কথায়। সে বলে, ‘‘আগে ক্লাসে ভাল করে কথা বলতে পারতাম না। এখন কিছু বুঝতে না পারলেই বলি।’’ আরও এক ছাত্রী মাইনো হেমব্রম বলে, ‘‘আগে নিজের নামটাও লিখতে পারতাম না। এখন পারি”।

স্কুলের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকেরাও। তাঁদের বক্তব্য, অনেক স্কুলেই যেখানে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দেরিতে ক্লাসে আসার অভিযোগ ওঠে। সেখানে এই স্কুলের শিক্ষকেরা ছুটির দিনেও ক্লাস নিচ্ছেন। যদিও স্কুলের শিক্ষক বিকাশ ঘোষ, সৌভিক পালেরা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের তৈরি করতে হবে, এই ‘চ্যালেঞ্জ’টা আমরা নিয়েছি। আর তার জন্য যা যা করা দরকার, করব।’’

শিক্ষকদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘এটা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।’’ জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক শারদ্যুতি চৌধুরীর দাবি, ‘‘এর ফলে অন্য স্কুলের শিক্ষকেরাও উদ্যোগী হবেন। উপকৃত হবে পড়ুয়ারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন