ভূগর্ভে ইসিএলের চালু খনি রয়েছে। তার উপরেই চলছে বেআইনি খনন। অবৈধ ভাবে কয়লা তোলার মতলবে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এগোচ্ছে দুষ্কৃতীরা। আর কিছুটা এগোলেই সে সুড়ঙ্গ গিয়ে পড়বে বৈধ খনিতে। অবৈধ খনির এমন দাপটে তাঁদের খনি দিনে দিনে বিপন্ন হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন ইসিএলের কুনস্তরিয়া এরিয়া কর্তৃপক্ষ।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কুনস্তরিয়া এরিয়ার ৩ নম্বর পিটের কাছে টিবি হাসপাতালের পাশে অবৈধ খননের খবর পেয়েছিল সংস্থার নিরাপত্তা বিভাগ। ৬ সেপ্টেম্বর সিআইএসএফ এবং সংস্থার নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়। ওই একই জায়গা থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর বেআইনি কয়লা, খননের যন্ত্রপাতি, খনি থেকে জল বার করার পাইপ ইত্যাদি। তার পরেই রানিগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন এরিয়ার পার্সোনেল ম্যানেজার আবির মুখোপাধ্যায়।
খনির এক আধিকারিক জানান, যেখানে দুষ্কৃতীরা কয়লা কাটছিল, তার ঠিক নীচে ৩ নম্বর পিট। সেখানে প্রতি শিফ্টে কয়েকশো কর্মী কাজ করেন। দুষ্কৃতীরা উপরে খানিকটা জায়গায় কয়লা কেটে, সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এগোচ্ছে। ফলে, এক সময়ে সুড়ঙ্গ বৈধ খনির চালে পৌঁছে যাবে। তার ফলে খনিতে জল ও বাতাস ঢুকে দুর্ঘটনার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।
আবিরবাবু বলেন, ‘‘বিনোদ বাগাড়িয়া ও রাজেশ বাগাড়িয়ার নেতৃত্বে এই বেআইনি খনন চলছে জেনেছি। এরিয়ার মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক আমাকে বিষয়টি জানানোর পরে পুলিশে তাদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছি।’’ পুলিশ জানায়, বিনোদ ও রাজেশের নামে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের নামে এর আগেও কয়লা চুরির অনেক অভিযোগ রয়েছে।
বিনোদ অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘আমি রীতিমতো অসুস্থ। কোনও কাজ করতে পারি না। মিথ্যে মামলা করা হয়েছে। পাল্টা মামলা করার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি।’’ রাজেশরও বক্তব্য, ‘‘মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে আমাদের।’’
স্থানীয় আইএনটিইউসি নেতা তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়, সিটু নেতা মনোজ দত্তদের দাবি, প্রায় ন’বছর আগে অবৈধ খননের জেরে বন্ধ করে দিতে হয় নর্থ সিহারশোল কোলিয়ারি। লাগোয়া বেআইনি খাদানে আগুন ধরে গেলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় মাস দেড়েক ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে জামুড়িয়ার নিউকেন্দার ৪ নম্বর খনি। সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত খনিটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ডিরেক্টর জেনারেল অব মাইন্স সেফটি (ডিজিএমএস)। অবৈধ খনন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বহু খনিতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে তাঁদের দাবি।