কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, সেভিংস অ্যাকাউন্ট ছাড়া অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে অচল নোট জমা দেওয়া যাবে না — কিন্তু নির্দেশিকা রাজ্যের হাত ঘুরে বুধবারেও পৌঁছয়নি। ফলে দিনভরই জেলার কোনও ডাকঘর ইন্টারনেটে নির্দেশিকা দেখে কাজ করছে, কেউ সমস্ত খাতেই পুরনো নোট জমা নিয়েছে। নির্দেশের বিভ্রান্তিতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন মানুষ।
অচল নোট জমা নেওয়া হবে না, এই মর্মে আসানসোল মুখ্য ডাকঘর ও তার অধীনে থাকা ৫৪টি ডাকঘর বিজ্ঞপ্তি দেয়। বুধবার সকাল প্রচুর মানুষ আসানসোলের মুখ্য ডাকঘরের সামনে নোট জমা দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি দেখে সকলকেই ফিরে যেতে হয়। সাঁকতোড়িয়া, বরাকর, নিয়ামতপুর প্রভৃতি এলাকায় গ্রাহকদের একাংশ সামান্য বিক্ষোভও দেখান। গ্রাহকদের একটি বড় অংশের ক্ষোভ, ‘‘ডাকঘরে মূলত স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা জমা করা হয়। এখন টাকা না নিলে কোথায় যাব।’’ এ দিন কেন্দুয়া বাজারের ডাকঘরে এসেছিলেন কুলটির বাসিন্দা কমলা বাউরি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এই পোস্ট অফিসে টাকার লেনদেন করি। এ বার ব্যাঙ্কেই লাইন দিতে হবে।’’
দুর্গাপুরের কোনও ডাকঘরে ১০ নভেম্বর থেকে প্রথম তিন দিন নতুন নোট ছিল না। এর জেরে গ্রাহকেরা পুরনো নোট বদলানোর সুযোগ পাননি। পরে ধাপে ধাপে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু দিন কয়েক আগে ফের বদলে যায় ছবিটা। বিভিন্ন ডাকঘরের কর্মীরা জানান, ব্যাঙ্ক থেকে নতুন নোটের জোগান থেমে যাওয়ায় নোট বদলানো বন্ধ। দিন কয়েক পরে বন্ধ হয়ে যায় নগদ জমাও। কারণ, ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, নগদ টাকা এত জমা পড়ছে, যে তা রাখার জায়গা নেই। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়, ডাকঘর থেকে আর টাকা নেওয়া যাবে না।
তবে এ দিন অন্য ছবি দেখা গিয়েছে, কাটোয়া ডাকঘরে। সেখানে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে বুধবার সেভিংস অ্যাকাউন্টে অচল নোট জমা নেওয়া হয় বলে জানান পোস্ট মাস্টার মিলন চক্রবর্তী। তবে কেবিপি, সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যকাউন্টের মতো স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা জমা নেওয়া হয়নি। ডাকঘর সূত্রে খবর, নির্দেশিকা এখনও হাতে না এলেও তা ইন্টারনেটে দেখা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জেলার বেশির ভাগ ডাকঘরে ফের কবে নোট-বদল শুরু হবে, তা নিয়েই ধন্দ রয়েছে। অনেক গ্রাহক ডাকঘরের অপেক্ষায় না থেকে ব্যাঙ্কের পথও ধরেছেন।