দুর্ঘটনার পরে বিক্ষোভের সময়ে কয়েক জন অভিযোগটা তুলেছিলেন। কিন্তু পুলিশ আমল দেয়নি। এ বার প্রশাসনের কাছে কাঁকসার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগ করলেন, পুলিশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের বদলে রাস্তায় গাড়ি আটকে তোলা আদায়ে বেশি ব্যস্ত থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে।
১৩ মার্চ সন্ধ্যায় পানাগড়ে দানবাবার মাজারের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ডব্লিউ ওরাং (৩০) ও তাঁর ভাই রাকেশ ওরাংকে (২৫) ধাক্কা দেয়। দুই ভাইয়েরই মৃত্যু হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে অভিযোগ করেন, রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের একাংশ টাকা আদায়ের জন্য লরিটিকে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। পালানোর চেষ্টা করতে গিয়েই লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। বেগতিক দেখে পুলিশের গাড়িটিও পালায় বলে দাবি। পরে ঘটনাস্থলে গেলে ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেলও ছোড়ে।
প্রশাসনের কাছে সম্প্রতি হাজরাপাড়া, মীরেপাড়া, মিনিবাজার ও পানাগড় গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ সে দিনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে ওই মোড়ে কড়া ট্রাফিক নজরদারি চালু করার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা বীরু বাউড়ি, রতন মল্লিক, নন্দু মুর্মু, রাজীব দত্ত, উত্তম রুইদাস, প্রকাশ রায়েরা জানান, পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক থেকে পানাগড় বাইপাসে ওঠার জন্য বর্ধমান ও দুর্গাপুরের দিকে দু’টি রাস্তা উঠে গিয়েছে। একাধিক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, বাজার, ব্লক হাসপাতালে যেতে অনেকেই সেই চৌমাথা ব্যবহার করে থাকেন। অথচ, ট্রাফিক পুলিশকর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের অনেকেই গুরুত্ব দিয়ে সেখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন না বলে দাবি তাঁদের।
রতনবাবু, প্রকাশবাবুদের কথায়, ‘‘প্রকাশ্যে যানবাহন থামিয়ে, জোর-জবরদস্তি করে তোলা আদায়ে ব্যস্ত থাকেন অনেক পুলিশকর্মী। ফলে, বিপজ্জনক ওই মোড়টিতে যানজট হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে।’’ প্রশাসনের কাছেও তাঁরা দাবি করেছেন, ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় দানবাবা মেলায় যাতায়াত করছিলেন বহু মানুষ। সেই সময়ে ইলামবাজারমুখী লরিটি পুলিশের হাত থেকে বাঁচতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়।
মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা জানান, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং আশপাশের রাস্তায় দুর্ঘটনা রুখতে ইতিমধ্যে একটি বিশেষ দল গড়া হয়েছে। সেই দলে রয়েছে পুলিশও। পানাগড়ের মোড়ের বিষয়টি তিনি আলাদা ভাবে ওই বিশেষ দলের বৈঠকে উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেবেন বলে আশ্বাস মহকুমাশাসকের।
জেলা পুলিশের এক কর্তাও জানান, অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।