পুরসভার দ্বারস্থ হয়েও বেআইনি নির্মাণ, পুকুর ভরাট রোখা যাচ্ছে না— স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ ভাবেই সম্প্রতি কাটোয়ার পুরপ্রধান অমর রামের বিরুদ্ধে চিঠি পাঠালেন পুরসভার ১৩ জন কাউন্সিলর। তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। চিঠির শেষে ওই কাউন্সিলরদের দাবি, পুরসভার ‘গৌরব পুনরুদ্ধার, দলের উন্নয়নমুখী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’ ফেরাতে দলীয় স্তরে ও প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত দরকার। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, সব নিয়ম মেনেই কাজ করেছেন তিনি।
ওই কাউন্সিলরদের অভিযোগ, পুরএলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে। উন্নয়নের কাজেও কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। অভিযোগকারী কাউন্সিলরদের ক্ষোভ, শুধুমাত্র দু-তিনটি ওয়ার্ডে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। সেই সব কাজও নিম্নমানের। তাঁদের আরও দাবি, বিভিন্ন বিষয়ে আর্থিক অনিয়ম সামনে চলে এসেছে। এমনকী, এক খাতের টাকা অন্য খাতেও খরচ করা হচ্ছে। এর জেরে অডিটের সময় সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। এ ছাড়া পুর-নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করে ধারাবাহিক ভাবে কর্মী নিয়োগ, পুর-এলাকায় ‘মিশন নির্মল বাংলা’ সফল না হওয়া, বেহাল পরিষেবা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে।
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পুরপ্রধান অমর রাম বলেছেন, ‘‘অভিযোগ তো যে কেউ করতেই পারেন। আমি কাটোয়ার উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছি। সব কাউন্সিলরদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে পুর-আইন মেনে কাজ করছি।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, পুরসভা বিরোধীশূন্য হলেও দলের মধ্যেই গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে শুরু থেকেই। এর জেরে পুরবোর্ড তৈরির প্রায় বছর দেড়েক পরেও কাটোয়া পুরসভার উপপুরপ্রধানের নাম ঘোষণা করা যায়নি। গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছেন কাটোয়ার পর্যবেক্ষক উজ্জ্বল প্রামাণিক। বৈঠক করে গিয়েছেন জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ, দলের বর্ধমান জেলার পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। এ সবের পরেও কংগ্রেস থেকে আসা ১০ জন ও তৃণমূলের টিকিটে জেতা তিন জন কাউন্সিলর জেলা সভাপতিকে এই চিঠি দিয়ে দিয়ে অভিযোগ করেছেন।
ওই চিঠিতে ১৩ জনের সই থাকলেও কেউই অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। যদিও স্বপনবাবু ওই চিঠি প্রসঙ্গে বলেছেন, “দলের শীর্ষ নেতাদের বিষয়টি জানাব। তাঁদের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করব।’’